রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত জনপ্রিয় চায়ের ব্র্যান্ডগুলোর টি ব্যাগগুলোতে বিপজ্জনক মাত্রায় বিষাক্ত ভারী ধাতু পাওয়া গেছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার (ইএসডিও) নতুন অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়, যা জনস্বাস্থ্য ও ভোক্তা সুরক্ষার জন্য গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
“বিষাক্ত পদার্থে তৈরি: চা ব্যাগ এবং শুকনো আলগা চায়ে ভারী ধাতুর ঝুঁকি উন্মোচন” শীর্ষক গবেষণাটি বুধবার ঢাকায় ইএসডিও-এর সদর দপ্তরে প্রকাশ করা হয়।
স্থানীয় বাজার থেকে সংগৃহীত ১৩টি নমুনা (১২টি টিব্যাগ ও একটি আলগা পাতা) পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এগুলোতে দূষণের মাত্রা আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত নিরাপদের মাত্রা বহুগুণ ছাড়িয়ে গেছে।
পরীক্ষায় পাওয়া গেছে, ক্রোমিয়ামের মাত্রা ১,৬৯০ পিপিএম (নিরাপদ সীমা ৫ পিপিএম), সিসা ৫১ পিপিএম (সীমা ৫ পিপিএম), পারদ ১০৮ পিপিএম (সীমা ০.৩ পিপিএম) এবং আর্সেনিক ১৪ পিপিএম (সীমা ২ পিপিএম)। এছাড়া, টিব্যাগের প্যাকেজিংয়ে অ্যান্টিমনির মাত্রা ১৫৪ পিপিএম পর্যন্ত পাওয়া গেছে। গবেষণায় ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের উপস্থিতিও ধরা পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের উচ্চমাত্রার দূষণ নিয়মিত চা পানকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে দৈনিক ২-৩ কাপ চা পান করেন ৫৫ শতাংশ মানুষ, আর ২৭ শতাংশ চার বা তার বেশি কাপ পান করেন। তবে মাত্র ১ শতাংশ ভোক্তা টিব্যাগে ভারী ধাতুর উপস্থিতি সম্পর্কে জানেন।
গবেষণায় ইতিবাচক দিক হিসেবে চা পাতায় আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, জিঙ্ক ও কোবাল্টের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানও পাওয়া গেছে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইএসডিও-এর চেয়ারম্যান মারগুব মোর্শেদ বলেন, “এটি ভোক্তা অধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। আমরা কর্তৃপক্ষ, উৎপাদক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।”
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই সংকট মোকাবিলায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকি ও ভোক্তাদের সচেতনতা বাড়ানো এখন জরুরি।