জনগণের বাঁধার মুখে ফিরে গেলেন বোর্ডের কর্মকর্তারা

আহাদুল্লাহ সানা, সাতক্ষীরা।। জনগণের বাঁধার মুখে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে ফিরে গেলেন বোর্ডের কর্তারা। শনিবার (৪ অক্টোবর)  দুপুর ১২টার দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে আশাশুনি উপজেলার আশাশুনির চেঁচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায়। মাদ্রাসায় অধ্যক্ষসহ নয় পদে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

স্থানীয়রা জানায়, কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা মাদ্রাসা-ই আলিয়ার পদচ্যুত প্রিন্সিপাল মাওঃ আব্দুর রশিদ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে এবং অভিভাবক প্রতিনিধি ও অন্যান্য সদস্যদের অগোচরে চেঁচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার অবৈধ উপায়ে সভাপতি হয়ে মাদ্রাসার বিভিন্ন পদে ৯ জন শিক্ষক/ কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্য দেওয়ার চেষ্টা করেন।

স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি বাতিল ও কোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রিন্সিপালসহ নয় পদে অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রধানসহ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে শুক্রবার ও শনিবার দুদিন ধরে পালন করা হয়।

শনিবার সকাল থেকে ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে মাদ্রাসার গেটের সামনে অবস্থান নেয় চাকরি প্রত্যাশীসহ সাধারণ মানুষ। দুপুর বারোটার দিকে ডিজির প্রতিনিধিসহ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আসলে প্রবেশের মুখে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। এ সময় নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীদের সকল কথা শুনে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে পথ থেকেই ফিরে যান। এদিকে সকাল থেকেই সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করেন।

আনুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, আমাদের এলাকার আব্দুর রশিদ পূর্বে ঢাকা মাদ্রাসা-ই আলিয়ার প্রিন্সিপাল ছিলেন। ০৫ আগষ্ট এর পর তিনি চাকুরীচ্যুত হয়ে এলাকায় ফিরে আসেন এবং তাকে অত্র মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি একই পরিবারের ব্যক্তিদের নিয়ে অত্র মাদ্রাসার পুর্নাঙ্গ কমিটি সাজিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন আমরা কমিটি বাতিলসহ নয় পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করি। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এসব তোয়াক্কা না করে শনিবার নিয়োগের দিন ধার্য করেন। বোর্ডের কর্মকর্তারা মাদ্রাসার গেটের মুখে আসলে ভুক্তভোগীদের কথা শুনেন এবং পরীক্ষা স্থগিত করে চলে যান।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন সাংবাদিককে বলেন, চেঁচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার নয়টি পদে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার কার্যক্রমের জন্য এসেছিলাম। কিন্তু স্থানীয়রা চান না আজ নিয়োগ হোক। তাই ফিরে যাচ্ছি। অন্য একদিন দিন তারিখ ঠিক করে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

আশাশুনি থানার তদন্ত অফিসার ওয়াদুদ রহমান বলেন, মাদ্রাসায় নিয়োগ নিয়ে দুই পক্ষের অবস্থান কথা শুনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আইনশৃঙ্খল পরিস্থিতি বর্তমান স্বাভাবিক রয়েছেন বলে তিনি জানান।

তবে সকল অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে মাদ্রাসা সহ-সভাপতি আলহাজ্ব জনাব আলী কথা বলতে রাজি নন তিনি।

এদিকে শনিবার সকালে মানববন্ধনে ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি রোকনুজ্জামান খোকনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস। অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রমজান আলী, অভিভাবক সাইফুল্লাহ সরদার, সমাজসেবক নাজমুল হাসান, প্রার্থী আলমগীর হোসেন ও মুজাহিদুর রহমান প্রমূখ।

Share.

উপদেষ্টাঃ আলহাজ সিরাজ আহমেদ
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ রফিকুল ইসলাম রনি
প্রধান সম্পাদকঃ ইব্রাহিম রুবেল
বার্তা সম্পাদকঃ আব্দুল বারী
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
যোগাযোগঃ
৬/সি, আনেমা ভিস্তা (৭ম ফ্লোর), ৩০ তোপখানা রোড, ঢাকা ১০০০।
মোবাইলঃ ০১৮২৪২৪১০২৩, ০১৭১৯২৬৪০৪৫

Exit mobile version