
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা)।। আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরকারি নিয়মনীতি অমান্য করে ভূগর্ভস্থ বালি উত্তোলনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। প্রকাশ্যে বালি উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
আজকে বুধহাটা এলাকার একটি ঘটনা তুলে ধরতে চাই। বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা-শ্বেতপুর এলাকায় মৎস্য ঘের থেকে গত দুই মাস ধরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকার ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এ অবৈধ কর্মযজ্ঞ বেউলা মায়ের মন্দির সংলগ্ন এলাকার প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বলেও জানান তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা মায়ের মন্দির সংলগ্ন মৎস্য ঘের থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিভিন্ন অংশে ওই বালুর ভিট তৈরি করছেন বালু খাদক কায়েম সরদার। একই সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকের বাড়ির আঙ্গিনার গভীর জায়গা ভরাট করতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অনিয়ম দেদারছে করা হচ্ছে। ড্রেজারের শ্রমিক কায়েম, তারা একজন নেতার অধীনে দিন হাজিরায় বালু তোলার কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেউলা গ্রামের এক কৃষক বলেন, এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে আমাদের ফসলি জমি। বিষয়টি মৌখিকভাবে ড্রেজার ব্যবসায়ীদের জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বরং এ বিষয়ে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি করলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দিয়েছেন আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বাসিন্দা আরশাদ সরদারের ছেলে কায়েম সরদার। সব সময়ই ড্রেজার দেখাশোনার জন্য ৭-৮ জন লোক পাহারায় থাকেন।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, দু’মাস ধরে এ বালু বাংলা ড্রেজার দিয়ে অবাধে বিক্রি করছে। আমরা কিছু বললে তারা বলে সরকারের কাছ থেকে নাকি বাংলাদেশের সব বালু কিনে নিয়েছে তারা।
অভিযুক্ত ড্রেজার মেশিন মালিক আশাশুনি উপজেলার ১নং শোভনালী ইউনিয়নের কায়েম সরদার বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে কোনো ক্ষতি হবে না। সব কিছু ম্যানেজ করে কাজ করছি। আমার কেউ কিছু করতে পারে না।
আশাশুনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

