
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা)।। বিমাতা ভাইয়ের কাগজপত্র চুরি করে নিজের নাম ব্যবহারে মুক্তিযোদ্ধা হওয়া আনছারুজ্জামানকে বাতিল এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকাভুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে আশাশুনি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
লিখিত বক্তব্য ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উপজেলার নাংলা গ্রামের মৃত কারাচাদ মোল্যার ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা জামালউদ্দিন মোল্লা জানান, আমার বিমাতা ভাই আনছারুজামান বাড়ীতে থাকাকালীন সময়ে আমার মুক্তিযোদ্ধা সকল কাগজপত্র চুরি করে নেয়। ঐ সময় আমি খুলনায় থাকি, তার কাছে মুক্তিযোদ্ধা কাগজপাতি চাইলে আজ দেব কাল দেব বলে ঘুরাতে থাকে। একসময় ঝগড়া বিবাদ হলে বেশী বাড়াবাড়ি করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তখন উনি আওয়ামীলীগের বড় নেতা আমি ভয়ে বাড়ীতে ফেরতাম না। ২০০০ সালে আমার ২টি কিডনীতে পাথর হয়, ঘা হয়, প্রস্রাবে রক্ত পড়তে থাকে। খুলনায় ডাক্তার দেখালে বলে দেরী হয়ে গেছে এখনই অপারেশন করতে হবে। তখন এক আত্মীয়র মাধ্যমে ঢাকায় অপারেশন করি। তিন মাস পরে আবার অনেক পাথর ধরা পড়লে চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ি। ভারতে উখাট কিডনি মেডিকেল হসপিটালে অপারেশন করি। একটু সুস্থ্ হয়ে ১৫/৫/২২ তাং জামুকায় অভিযোগ করি।অভিযোগ আমলে নিয়ে ২১/১২/২২ তারিখে আমাকে স্বাক্ষী প্রমান নিয়ে হাজির হতে বলেন। আমি স্বাক্ষীদের নিয়ে ঢাকায় জামুকা মুক্তিযোদ্ধা অফিসে হাজির হই। তখন বিবাদী সময়ের আবেদন করেন এবং বার বার সময় নিতে থাকেন। মন্ত্রী মহোদয় আশাশুনির ইউএনও সাহেবের কাছে তদন্ত পাঠালে, ইউএনও সাহেব আমাকে স্বাক্ষী প্রমান ও কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে বলেন। বাদী সময় চায় যতবার দিন পরে ফাইল খুজে পাওয়া যায় না। এভাবে ২ বছর চলে যায়। ইউএনও সাহেব বদলী হলে তদস্থলে কৃষ্ণা রানী দাশ যোগদান করেন। তাঁর কাছে সকল কথা খুলে বলায় উনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে, এতদিনে তদন্ত হয় নাই এখন তদন্ত হবে। তিনি এসি (ল্যান্ড) স্যারের নিকট তদন্ত দেন এবং এসি (ল্যান্ড) ৮/৯/২০২৪ তারিখে স্বাক্ষী সহ কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে বলেন। আমি যথাসময়ে হাজির হয়ে স্বাক্ষীগন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে হাজির হলে বিবাদী সময়ের আবেদন করেন। স্যার এবার বিবাদী হাজির না হলে একতরফা ভাবে খারিজ করে দেব বলেন। পরবর্তীতে আমি স্বাক্ষীগন ও মুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন, মাহাবুবুর রহমান, বককার গাজী, আনিছুর রহমান, মোসলেম গাজী, লুৎফর রহমান, কামরুল ইসলাম, পরিমল চন্দ্র কার্তিক, ইসমাইল মোল্লা, রফিকুল ইসলাম, রুহুল কুদ্দুসকে
নিয়ে সঠিক সময়ে হাজির হলে এসি ল্যান্ড মুক্তিযোদ্ধাদের ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের স্বাক্ষীনেন এবং আনছারুজজামান ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে ঘোষনা দেন। বিবাদী এলাকার কোন গন্যমান্য ব্যক্তি:কে হাজির করতে পারেন নাই। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট যশোর সেনানিবাসে লোক নেয়। এসময় আনছারুজজামান, মোক্তার হোসেন, আঃ মালেক যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে দেশের অবস্থা খারাপ হলে আনছারুজ্জামান যশোর হতে পালিয়ে খুলনায় চলে আসে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরে গ্রামের বাড়ীতে চলে আসে। জামুকায় গত ২৯/৭/২৫ তাং উভয় পক্ষের শুনানি হয়। সেখানেও আনছারুজজমান আমার মুক্তিযোদ্ধার সকল কাগজপত্র দেখিয়ে নিজেই মুক্তিযোদ্ধা সাজে ও সরকার হতে সকল প্রকার ভাতা নিচ্ছে। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আনছারুজ্জামান আমার কাগজপত্র ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র হাসিল করেছে। ইউএনও ও এসি ল্যান্ডের তদন্তে ও রিপোর্টে যা প্রমানিত হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আনছারুজ্জামানের কাগজপত্র বাতিল এবং আমাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভুক্ত করতে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করবেন সে দাবী জানাচ্ছি।

