
শাহজাহান সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি।। পাবনা সদরের চরতারাপুর ইউনিয়নে নামাজরত অবস্থায় নিজাম প্রামানিক (৬০) নামের একজন বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের তিন উপপরিদর্শক (এসআই) আহত হয়েছে।
রোববার (০২ নভেম্বর) রাত ৮ টার দিকে ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নিজাম প্রামাণিক ওই এলাকার মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অভিযুক্ত ছেলে মোস্তফা প্রামাণিকও বাবার সঙ্গে কৃষকের কাজ করতেন। তবে তিনি মাদকাসক্ত ছিল।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে সন্ধার পর বাসায় ফেরে। খাওয়া-দাওয়া শেষে ঈশার নামাজে মাত্র দাঁড়িয়েছে। এমন সময় সুযোগ বুঝে দরজা আটকিয়ে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘর থেকে বের হয়। এরপর নিজেই পাশের রুম আটকিয়ে দিয়ে বসে থাকে। পরে বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে ঘরে গিয়ে দেখে মৃত দেহ পরে আছে। এরপর ওই ছেলেকে ঘরের ভিতরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে দেয়। এরপর স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নিহতের ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, আমার বাবাকে নামাজরত অবস্থায় কুপিয়ে হত্যা করেছে৷ আমরা খাওয়া দাওয়া শেষে রুমে শুয়ে আছি। এমন সময় রুম আটকিয়ে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে। এর আগেও সে আমাকেও মেহগনি ঢাল দিয়ে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকেও আমাকে হত্যা করার জন্য গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মাঠের মধ্যে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করেছে। বাড়ির লোক বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে সতর্ক করে।
তিনি আরও বলেন, সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের থেকে টাকা চাইত। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো।তাকে এখনই ক্রসফায়ারে হত্যা করলেও আমার ও পরিবারের কোন দাবি দাওয়া থাকবে না। তাকে এখনই ফাঁসি দেওয়া হোক।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের টিম এখন ঘটনাস্থলে আছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।

