
নওয়াপাড়া অফিস।। একুশ নভেম্বর দুপুরে নওয়াপাড়ার ভৈরব নদ যেন সেদিন নবজীবন ফিরে পেয়েছিল। সকালে আকাশে নরম শীতের রোদ, আর নদীর দুই তীরে যতদূর চোখ যায় মানুষের ঢল। গ্রামবাংলার শতবর্ষের ঐতিহ্য—নৌকা বাইচ—আজ আবারও ফিরিয়ে এনেছে সেই পুরোনো দিনের উৎসবের উচ্ছ্বাস।
অভয়নগর স্পোর্টস ক্লাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই নৌকা বাইচ যেন আর পাঁচটা প্রতিযোগিতা নয়; বরং নদীপাড়ের মানুষের আবেগ, গর্ব আর শেকড়ের গল্প। প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর-৪ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসূল। অভয়নগর স্পোর্টস ক্লাবের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
দুপুর গড়াতে না গড়াতেই ভৈরব নদ যেন উত্তাল হয়ে ওঠে বৈঠার ছন্দে। দীর্ঘ সরু নৌকাগুলো নদীর বুকে ছুটে চলে, যেন তরঙ্গের সঙ্গে প্রতিযোগিতা। নৌকায় ওঠা মাঝিদের কণ্ঠে ভেসে আসে সুর—
“ওই নাও বাও ভাই, নদীর বুকে ধাই…”
এই ডাক যেন এক মুহূর্তে নদীর দুই তীরকে এক সুতোয় বাঁধা আনন্দমেলায় পরিণত করে।
প্রতিযোগিতার ফলাফলও ছিল উত্তেজনায় ভরপুর।
চ্যাম্পিয়ন: টুঙ্গিপাড়ার ‘জয় মা কালী’ — পুরস্কার ৩০,০০০ টাকা,
প্রথম রানার্স আপ: মাগুরার টাইগার নৌকা ২৫ হাজার টাকা এবং টুংগীপাড়া নৌকা বিশ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে পায়।
নদীর তীরে অপেক্ষমাণ হাজারো মানুষের হাততালি আর উল্লাস প্রতিটি নৌকার গতিকে যেন আরও উসকে দিচ্ছিল। শিশুদের বাঁশির শব্দ, ঢাক-ঢোলের তাল, আর দর্শকদের টানা উচ্ছ্বাসে ভৈরব নদ হয়ে উঠেছিল এক প্রাণোচ্ছল উৎসবের মঞ্চ।
আজকের নৌকা বাইচ আবারও স্মরণ করিয়ে দিল—নদী শুধু পানি নয়; নদী হলো মানুষের জীবনের অংশ, গ্রামের হৃদস্পন্দন, আমাদের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ। ভৈরব নদীর বুকে ভেসে ওঠা এই প্রতিযোগিতা যেন আমাদের পূর্বপুরুষদের সেই অভিন্ন চিত্রই তুলে ধরল—যেখানে আনন্দ, সাম্য আর সম্প্রীতি মিলেমিশে যায় স্রোতের মতো।
নদীপাড়ের মানুষ তাই আজও বিশ্বাস করে। যে খানে নদী আছে, সেখানেই জীবন; যেখানে নৌকা বাইচ আছে, সেখানেই উৎসব।
| উপদেষ্টাঃ আলহাজ সিরাজ আহমেদ | প্রকাশক ও সম্পাদকঃ রফিকুল ইসলাম রনি | প্রধান সম্পাদকঃ ইব্রাহিম রুবেল | বার্তা সম্পাদকঃ আব্দুল বারী |
যোগাযোগঃ
৬/সি, আনেমা ভিস্তা (৭ম ফ্লোর), ৩০ তোপখানা রোড, ঢাকা ১০০০।
মোবাইলঃ ০১৮২৪২৪১০২৩, ০১৭১৯২৬৪০৪৫