
★ হামলা–হুমকি–নির্যাতনের বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্নবীকরণ।
নিজস্ব প্রতিবেদক।। দেশজুড়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হুমকি, নির্যাতন এবং হয়রানিমূলক মামলার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা সংগঠন সাংবাদিক সুরক্ষা পরিষদ তার পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে বর্ণাঢ্য র্যালি ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে। মঙ্গলবার ২৫ নভেম্বর বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে দেশব্যাপী বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক, কলামিস্ট, শিক্ষাবিদ এবং নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণে।
র্যালি বিকেলেই প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। অংশগ্রহণকারীরা সাংবাদিক নিরাপত্তা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, পেশাগত মর্যাদা এবং হয়রানিমূলক মামলার অবসান—এমন নানা দাবিতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান। সংগঠনের নেতারা জানান, গত পাঁচ বছরে দেশজুড়ে সাংবাদিকদের ওপর বাড়তে থাকা আক্রমণ ও নিপীড়নের ঘটনাগুলো তাদের আন্দোলনের ভিত্তি মজবুত করেছে।
র্যালি উদ্বোধন করেন সাংবাদিক সুরক্ষা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ আবুবকর সিদ্দীক ভূইঁয়া ও সাধারণ সম্পাদক লায়ন মির্জা সোবেদ আলী রাজা । তিনি বলেন, “সাংবাদিকেরা যখন মাঠে সত্য অনুসন্ধানে কাজ করেন, তখনই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়েন। এই পাঁচ বছরে আমরা দেখেছি, অনেক সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন, নিখোঁজ হয়েছেন, মিথ্যা মামলার যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছেন। সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিটাই আমাদের সংগঠনের মূল প্রেরণা।”
তিনি আরও জানান, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব হলেও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই এর ঘাটতি দেখা যায়। সে কারণেই সাংবাদিক সুরক্ষা পরিষদ মাঠে থেকে সহায়তা, আইনি সহযোগিতা, প্রতিবাদ এবং জনমত গঠনের কাজ করে যাচ্ছে।
র্যালিতে অংশ নেওয়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদকরা বলেন, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রায়ই নানা ধরনের চাঁপ, ভয়ভীতি, স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের হুমকি এবং মিথ্যা মামলা মোকাবিলা করতে হয়। তাদের ভাষ্য, “সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে স্বাধীন গণমাধ্যম টিকবে না, আর স্বাধীন গণমাধ্যম না থাকলে গণতন্ত্রও টিকবে না।”
বিকেলের র্যালিটি জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বর থেকে শুরু হয়ে তোপখানা রোড, পল্টন মোড় হয়ে আবার প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। পুরো শোভাযাত্রা জুড়ে ছিল ঢাকডোল, স্লোগান আর উৎসবের আবহ। র্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনের নেতারা সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার বিচার দাবি করেন এবং আগামী দিনে আরও বৃহৎ পরিসরে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার লড়াই কেবল একটি সংগঠনের কাজ নয়; এটি সমাজের দায়িত্ব। তারা আশা প্রকাশ করেন, আগামী দিনে সরকার, প্রশাসন এবং গণমাধ্যম মালিকপক্ষ আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সুরক্ষা পরিষদে সিনিয়র সহ সভাপতি মামুনুর রশীদ নোমানী, হাফিজুর রহমান শফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক এবি এম তারেক, তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক সজীব তালুকদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের নে সাংবাদিক,ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা সহ বিভিন্ন গণ মাধ্যম কর্মী প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, “সাংবাদিক নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার যাত্রায় সবার অংশগ্রহণই আমাদের শক্তি। পাঁচ বছরের পথচলা আমাদের আরও দূর এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছে।”
পাঁচ বছর পূর্তির এই র্যালি শুধু উৎসব নয়, বরং সাংবাদিক সমাজের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার দাবিকে আরও জোরালোভাবে সামনে আনার এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা—এমনটাই জানান অংশগ্রহণকারীরা। সাংবাদিক সুরক্ষা পরিষদের আয়োজনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হুমকি, নির্যাতন এবং হয়রানিমূলক মামলার বিরুদ্ধে জাতীয প্রেসক্লাবের সামনে ২৫ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাংবাদিক সুরক্ষা পরিষদের সকল কর্মকান্ডের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বরিশালের গনমাধ্যমের ৩৫ সংগঠনের নেতা সিনিয়র সাংবাদিক মামুনুর রশীদ নোমানী।

