
বিশেষ প্রতিনিধি।। পাবনার কাশিনাথপুর বাসীর অসচেতনতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলা-উদাসীনতায় কাশিনাথপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এখন গণ-শৌচাগারে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪-৫শ জন মানুষ এখানে প্রস্রাব করার পাশাপাশি কাশিনাথপুর ফুলবাগান থেকে শুরু করে কাশিনাথপুর বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবহার করে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কাজে। অথচ কাশিনাথপুর ইউনিয়নসহ দুটি ইউনিয়নের (আহাম্মাদপুর ও জাতসাখিনী) আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের চিকিৎসা সেবার গুরুত্বপূর্ণ স্থান এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এছাড়া হাসপাতালের ভিতরে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা হরিজন (সুইপার) সম্প্রদায়ের আবাসস্থল উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটির সার্বিক পরিবেশ ব্যাহত করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন কাশিনাথপুরের সচেতন মহল। অনতিবিলম্বে হরিজন সম্প্রদায়কে হাসপাতাল এরিয়া থেকে অপসারণ করে অন্য কোথাও পুনর্বাসন, হাসপাতালের পুরাতন ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নিলামের মাধ্যমে অপসারণ ও মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগের মাধ্যমে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি জনবান্ধব চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপদান করতে পাবনা জেলা সিভিল সার্জন ও সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। তবে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিক্যাল অফিসার না থাকলেও উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার মাহমুদা আফরোজ সহ অন্যান্য স্টাফদের চিকিৎসা সেবা
প্রদান কার্যক্রমের প্রশংসা করেন তারা।
জানা যায়, কাশিনাথপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পুরাতন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় নতুন ভবন নির্মাণ করে চিকিৎসা কার্যক্রম সেখানে স্থানান্তর করা হলেও পুরাতন ভবন অপসারণ করা হয়নি। উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরের অংশ পরিস্কার
পরিচ্ছন্ন না রাখায় বাজারের ব্যবসায়ীরাও সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বাজারে আসা মানুষ এখানে প্রশাব করে থাকে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে সেবাপ্রত্যাশীদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।
কাশিনাথপুর হাঁট কর্তৃপক্ষ ও বণিক সমিতির নেতাকর্মীরা জানান, হাসপাতালটি সবসময় খোলা থাকে ও সেখানে কোন বিধিনিষেধ না থাকায়
বাজারে আসা ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সাধারণ সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ও প্রশাব করে থাকে।
সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন, অতিদ্রুত উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির পরিত্যক্ত ভবন নিলামপূর্বক অপসারণ করা হবে। একইসাথে প্রতিষ্ঠানটির ভিতরে মাটি
ভরাট করার বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন তিনি। তবে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতর থেকে হরিজন সম্প্রদায়কে অপসারণ বিষয়ে স্থানীয় সমস্যার কথা জানান তিনি।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা সিভিল সার্জন আবুল কালাম আজাদ ভোরের ডাককে বলেন, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটির সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির (পরিত্যক্ত ভবন অপসারণ, আবর্জনা অপসারণ ও দখলমুক্ত করার) লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব ইনশাল্লাহ।

