
অনির্বান রায়
এইচএসসি পরীক্ষার পর শুরু হয় ভর্তি যুদ্ধ। নিতে হয় ভর্তি যুদ্ধের প্রস্তুতি। এখানে হবে মেধার সর্বোচ্চ অনুশীলন। রেজাল্ট কী হবে, কী করবো, ভার্সিটি কোচিং করবো কি না, চান্স হবে কি না এইসব নিয়ে ভাবার ফুসরৎ নেই। এত প্রশ্ন নিজেকে না করে দ্বিধাহীন ভাবে নিজেকে হ্যাঁ বলো। অবারিত দিগন্তের উন্মোচন ঘটাতে , আজ থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হবে। মনে করবে, এই তিন মাস তুমি শুধু নিজেকে সময় দিবে। প্রয়োজনের বাইরে ফেইসবুক, মেসেঞ্জার বাদ দিয়ে দিবে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সবাই হতে পারবে না বিজ্ঞান বিভাগের। এটা সবাই জানে। নিজেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভার্সিটি কোচিং না মেডিক্যাল বা ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পর্যাপ্ত সিট রয়েছে। সেখানে ভর্তি হতে গেলে মেধাবীদের রীতিমত যুদ্ধ করতে হবে। এটা নিজের সাথে, প্রতিযোগীদের সঙ্গে। নিয়মিত পেপার পড়তেই হবে। খবর দেখতে হবে। বাংলা প্রথম পত্রের প্রবন্ধ, গল্প, কবিতার মূল বিষয়বস্তু জানতে হবে। লেখক পরিচিতি সাথে তাঁর আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো জানতে হবে। তাঁদের বিখ্যাত বইয়ের নাম, চরিত্র জানা আবশ্যক। মনে রাখতে হবে, ভার্সিটি ভর্তি প্রশ্নের নির্দিষ্ট সিলেবাস নাই। তাই প্রশ্ন কী হবে নির্দিষ্ট দিনে জানা যাবে। ইংরেজিতে খুব জোর দিতে হবে। ইংরেজির বেইসিক জানতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় 90 ভাগ বা তার বেশী ছাত্র ছাত্রী ইংরেজি তে পাশ করতে পারে না। তাই গ্রামার এবং ভোকাবুলারি প্রচুর জানতে হবে। সাধারণ জ্ঞানের কোনো শেষ নেই। প্রতিদিনের আপডেট জানতে হবে। বাংলাদেশ বিষয়াবলী ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী মুখস্থ করেই রাখতে হবে। ভালো রেজাল্ট করা আর চান্স পাওয়া সম্পূর্ণ আলাদা। একটা ভালো রেজাল্ট কখনই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট নিশ্চিত করবে না যদি না ভর্তি পরীক্ষা ভালো হয়। তাই পরিক্ষা কেমন হলো তাই ভেবে মোটেও সময় নষ্ট করবে না। বাজারে কোচিং সেন্টারের অভাব নেই। চটকদার বিজ্ঞাপনে ভুলবে না। তোমার অগ্রজ যারা চান্স পেয়েছে তাদের কাছে পরামর্শ নিবে। তোমার এই তিনমাসের ধ্যান জ্ঞান হবে বই ,বই আর বই। 1-12 ক্লাস পর্যন্ত কষ্টের ফল এই তিনমাসে নির্ধারিত হয়ে যাবে। জীবনে তো অনেক সময় নষ্ট করেছো, অনেকে অনেক পরিশ্রম ও করেছো।সবাই এই অল্প যে সময়টুকু আছে নিজেকে নিংড়ে দাও। আমি সরকারি সুন্দরবন কলেজে পড়তাম। পড়াশোনা কলেজ জীবনে কম করেছি। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষা শেষে আমি যে কষ্ট করছি আমি জানি। আমি একটা মিনিট ও নষ্ট করিনি। আমি অনেক রাত ঘুমাই ও নাই। পড়তে পড়তে এমন আত্মবিশ্বাস হয়েছিল যে পরীক্ষা দিলেই চান্স পাবো। তিনটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে অংশ নিয়ে তিনটায় ই ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলাম। তাই ভয় নয়, কঠোর পরিশ্রম করো, ভাগ্য সুপ্রসন্ন হবে। তোমার 99 ভাগ পরিশ্রম আর 1 ভাগ লাক যদি সাথে থাকে, তুমি সফল হবেই। ভর্তি যুদ্ধে তোমরা বিজয়ের হাসি হাসবে এই প্রত্যাশা রাখি। সবার জন্য শুভ কামনা থাকবে।
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ।
সরকারি নর্থ খুলনা কলেজ
তেরখাদা, খুলনা।

