নিরব ঘাতক
ওবায়দুল হক

যৌন রচনা লিখতে না পারা
অবুঝ প্রেমের মৃত্যু মিছিল চারিদিকে
এ কেমন বিচার বিধি,
কেড়ে নিয়ে কি সুখ পাও
কলেজ মোড় ,পুকুর ঘাট
কিংবা দূর থেকে তাকিয়ে থাকা
বেলকোনির ভালোবাসা !

লাল-নীল-হলুদ বাহারি কাগজে
বার্তাবাহক ঘুুড়ি ,কতোটা সাধনায়
প্রেয়সীর উঠোনে ফেলা যায় ;
কতোটা মুগ্ধপানে তাকিয়ে থাকলে
সাঁকো ভেঙে ঝুলে থাকা যায় ।

ক্লাস শেষ হতে একটু দেরী হলেই
রমণীর অনেক দূর
হেঁটে এগিয়ে যাওয়া পোষাতে
রামু কাকুর বাড়িতে কলেজ ব্যাগ রেখে
ধান ক্ষেতের সিতি বেয়ে ক্ষত বিক্ষত হয়ে
আরেকবার দেখার সুখ পাওয়া যায় ।

কতোটা আত্মবিশ্বাসী হলে
চোখে চোখে রাখা
অপরুপাকে সরাসরি কিছু না বলেও
আঘাতে জর্জরিত হয়ে হারাতে হয় !

তুমুল ঝড়ে জিম্মি হয়ে
এক বিশাল উঠোন বাড়ি
অতঃপর জানালার বাহিরে
বারিধারা নৃত্য সমাপনীর অপেক্ষা ;
এতগুলো বছর পেরিয়ে জানলাম
এ বাড়িতেই রাজকুমারী রয়েছে !!!
মেঘলা আলোয় উঠোনের অপর প্রান্তে থাকা
আমার দুধে আলতা পরী জানালায় বালিশ চেপে আছেন ।

বেকার জীবনে
সেই প্রথম আবিস্কারে উঠোনে
নেমে নৃত্যের ইচ্ছে
অনেক কষ্টে চাপিয়ে ছিলাম ।

উঠোনের জল থৈ থৈ গতি
রাজকুমারীর দিকে যেতে দেখেই
শুরু হলো নৌকা খেলা ,
প্রথমবারের মতো দুঃসাহসের বড়ি খেয়ে
ছোট্ট করে লিখেছিলাম , ”খুব ভালোবাসি”
স্রতের বিপরীতে থাকায় মন মহুয়ার ছোঁড়া
তুমুল বৃষ্টিতে উঠোনে নেমে
কাগজে ঢিল তুলে পড়তেই
মনে হলো বর্ষার জল আর খাঁচায় বন্দী
একের পর এক বজ্রপাতে আমি ক্ষতবিক্ষত
অনবরত অশ্রু উঠোনকে হাঁটুজলে পরিনত করেছে,
চিঠিতে লেখা ছিলো,
“জানালা টোকানোর দরকার নেই গো,
মিউ ডাক দিও ;দাদু দেরিতে ঘুমায় “!
বুঝতে বাকি নেই, আলো ছিলোনা আলেয়ায়
বৃষ্টিতে ভিজেই উঠোন ত্যাগ,
সরু রাস্তায় বৃষ্টির দল নিজ গৃহে
এগিয়ে দিতে দিতে মুখ খুললো,
“যে মূল্য দিতে জানেনা তাকে চোখের জল আর ভালোবাসা প্রকাশ করোনা,
তোমার কল্পনার রং এর
গোটা ছয়েক প্রেম সমতালে চলমান
তোমার নাম লেপ্টে দেয়াতে
ব্যাপারী বালিকা
একই বাড়ির ৪ নম্বর বাবুটা’কে উত্তর দিয়েছে;
ঘরে যাও মন দিয়ে লেখাপড়া করো,
অযথা মরিচীকায় সময় নষ্ট করো না “।

ডজন খানেক হৃদয় ভাঙার পরে
প্রেমব্যাপারীর বিয়ে হয়ে যায়,
ছেলে মোটা অংক মাইনে পায়,
দু ‘বাচ্চার জননী
বড়টাকে আমার স্কুলে ভর্তি করিয়ে
স্কুল ছুটি পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন,
মাঝে মাঝে জানালার বাহির দৃষ্টি দিয়ে
অংক ক্লাসে দুয়ে দুয়ে পাঁচ বলে ফেলায়,
সবচেয়ে জোরে হো হো করে
হেসে উঠে তাঁর ছেলেটা
আর বাসায় গিয়ে বলে,
“মা,মা টিচার জানালার বাহিরে তাকালেই
ভুল করে ফেলেন । ”
জিজ্ঞাসায় আমার উত্তর ছিলো,
“আসলেই ভুল করেছিলাম “।

১৯/৫/২০২০ খ্রিঃ

Share.
Exit mobile version