নিজস্ব প্রতিবেদক :- সুপার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মোকাবিলায় জনসাধারণকে সতর্ক করতে ‘বাংলাদেশ আনসার গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে বরিশালসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আনসার ভিডিপি সদস্যদের। সোমবার (১৮ মে) সকাল থেকে এ মাইকিং শুরু করা হয়।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রবিশালের জেলা কমান্ড্যান্ট, সৈয়দ ইফতেহার আলী জানান, ঘূর্ণিঝড়ে যে কোনো ধরনের সহায়তার জন্য বরিশাল জেলার ১০ টি উপজেলার ৮৭ টি ইউনিয়ন ও ৮৪ টি পৌরওয়ার্ডে অবস্থিত মোট ১ হাজার ৫১ টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজার ৭০ জন আনসার ভিডিপি সদস্য সদস্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রত্যেকটি গ্রামে আনসার ভিডিপি এর সদস্যরা সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সংযোগ এর বর্তমান অবস্থা, পানীয়জল এর ব্যবস্থা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উপযোগিতা ও কক্ষগুলো প্রস্তুত আছে কিনা পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দিচ্ছেন। এছাড়াও গ্রামে গ্রামে মাইকিং করে সকলকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করছেন।
মাইকিংয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে সাংকেতিক পতাকাও উত্তোলন করা হচ্ছে।

করোনাকালের এ সাইক্লোন মোকাবিলায় বিশেষ প্রস্তুতির কথা জানিয়ে সৈয়দ ইফতেহার আলী আরও বলেন, করোনার সংক্রমণ এড়াতে শেল্টার সেন্টারগুলোতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন। তা বজায় রাখতে প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে কমপক্ষে ১ জন থেকে ৩ জন আনসার ভিডিপির সদস্য সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। শুধু সামাজিক দূরত্বই নয় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য আনসার ভিডিপি সদস্যরা নিরলসভাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

এরই মাঝে বরিশালে জেলা প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় একাধিক প্রস্তুতি সভা করেছে। বরিশাল জেলায় ১ হাজার ৫১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয়, আনসার ভিডিপি, বরিশাল এ একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে যা ২৪ ঘন্টা চালু আছে, এছাড়াও বরিশাল জেলার প্রতিটি উপজেলাতে ১ টি করে ১০ টি উপজেলা আনসার ভিডিপি কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ৫৫৬ জন ভিডিপি ইউনিয়ন দলনেতা, দলনেত্রী ও আনসার কমান্ডাররা ১০৫১ টি আশ্রয়কেন্দ্রের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।

ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও পৌরওয়ার্ডে আমাদের রয়েছে ১০ সদস্যের ১ টি স্পেশাল রেসকিউ টিম (SRT) এবং জেলা পর্যায়ে আছে ৩২ সদস্যের একটি কুইক রেসপন্স টিম (QRT)। বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি বাহিনীর এই টিম গুলো দূর্যোগ পরবর্তী অসুস্থ/আহত ব্যাক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, খাবার বা ঔষধ সরবরাহ চ্যানেল ঠিক রাখা, রাস্তায় পরে থাকা বৃক্ষ বা অনান্য বাঁধা সরিয়ে জনগণের চলাচলের পথ সুগম করার কাজটি করে থাকে। এছাড়াও বরিশালের ৪৭৬ জন অংগীভূত আনসার সদস্য বিমানবন্দর, পাওয়ার স্টেশন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র, ব্যাংক সহ মোট ৮৭ টি স্থাপনাতে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় প্রয়োজনিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থ্য গ্রহন করেছে।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মহোদয়ের সদয় নির্দেশনা, রেঞ্জ কমান্ডার বরিশাল রেঞ্জ এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করেই এই বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।

Share.
Exit mobile version