এলিসন সুঙ, মৌলভীবাজার :- মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ বাসীর একমাত্র দুঃখ হচ্ছে এই ধলাই নদীকে নিয়ে । কমলগঞ্জ উপজেলার ৯ নং ইসলামপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মোকাবিলা গ্রাম এটি উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম। এই এলাকা হতে ধলাই নদীর প্রায় ৫০০ ফিটের অধিক বেড়ীবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্হায় রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। এ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাঁধের অংশ ছাড়া বাকি অংশ ইতিমধ্যে নদীগর্ভে মিশে গেছে।এছাড়াও মোকাবিল গ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জামে মসজিদ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে অর্ধেকাংশ নদীর উপর ঝুলে আছে তাই মসজিদটি বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ন অবস্হায় আছে।
বিষয়টি নিয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও এতদিনে মেরামত কাজ না হওয়াতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আর দিন কাটচ্ছে ভারতের সীমান্তবর্তী মোকাবিল (বিওপি) সংলগ্ন গ্রাম ও আশপাশ এলাকার জনসাধারন।
মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত এই এলাকায় সরজমিন গিয়ে জানা যায় বিগত ৩ বছর আগে আর,সি,সি,ব্লক দিয়ে বাঁধের কিছু অংশ মেরামত করা হয় যা বর্তমানে প্রবল পানির স্রোতে অনেকটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ও পাশের প্রায় পাঁচ’শ ফিটের অধিক বাঁধ বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
যেকোনো সময় ভাঙ্গনের কবলে পড়তে পারে। ভাঙ্গন সৃষ্টি হলে দক্ষিণ অঞ্চল সহ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানাযায়। মসজিদ থেকে এক দশক আগেও ৫০ মিটার দূরে নদীর অবস্থান ছিল। এক দশক ধরে নদীটি ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বর্তমানে মসজিদটি প্রায় অর্ধেক নদী গর্ভে চলেগেছে ।
মসজিদের মতোয়াল্লী ও সাবেক মেম্বার ফজলুর রহমান বলেন,বছরের পর বছর ধরে কোন প্রকার পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে এই মসজিদটির দক্ষিণাংশের অর্ধেক নদীতে ঝুলে থাকার কারণে স্থানীয় মুসল্লীরা নামাজের জন্য এখন কোথায় যাবেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মৃনাল কান্তি সিনহা বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মাটি ভাঙনে মসজিদটি প্রায় অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছেন এলাকাবাসী। তিনি আরো বলেন, মসজিদ সহ এলাকায় কয়েকটি স্থানে পূর্ব থেকে এই বাঁধে দীর্ঘদিন যাবৎ সমস্যা রয়েছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি রক্ষার্থে আমরা বিভিন্ন সময় উপরমহলে আবেদন করলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাঁধ পরিদর্শন করেছেন বেশ কয়েকবার। তবে কী করণে এখানকার সমস্যা পদক্ষেপ নেইনি সেটি বলতে পারছিনা। বর্তমানে বাঁধ রয়েছে যদি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে আশেপাশের বহু এলাকা তলিয়ে যাওয়া আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, সীমান্ত জটিলতার কারণে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের অংশে বোল্ডার রিভডিং পাথর গ্রোয়েন ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে নদী সংরক্ষণ কাজ তিন বছরের মধ্যে সমাপ্ত করার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিম তালে কাজ করার কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে এলাকাটি। তিনি আরো বলেন ইতিমধ্যে চারটি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং আরো ২০ টির মত বাড়ি যে কোন সময় ভাঙ্গন রোধ না করতে পারলে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভূমি নাসরিন চৌধুরী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের সাথে আমার যোগাযোগ হয়েছে ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জন্য।
পাউবো মৌলভীবাজারের সহকারি প্রকৌশলী শাকির আহমেদ জানান, আমরা এলাকাটি পরিদর্শন করেছি দুই দেশের সীমান্ত জটিলতার কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না আমরা উপর মহলে এটা জানিয়েছি দু’দেশের সীমান্ত জটিলতা শেষ হলে কাজ শুরু করা হবে।