*দেশ ত্যাগের হুমকি *প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা

বরিশাল অফিস :- মহামারি করোনা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা যখন মহাব্যস্ত। দেশের আদালতগুলো যখন একপ্রকার স্থবির, ঠিক এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুর্যোগের মধ্যেও মৃত্যুকে পরোয়া না করে দখলদাররা তাদের আগ্রাসী থাবা ও দখল বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে।

তারই ধারাবাহিকতায় প্রভাবশালী দখলদাররা এবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি পরিবারকে তাদের পূর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে উৎখাত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রাথমিকভাবে ওই পরিবারের ভোগদখলীয় একটি পুকুর ভরাটের জন্য ড্রেজার মেশিন বসিয়ে জোরপূর্বক বালু ভরাটের কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী পৌর এলাকার টরকী বন্দর সংলগ্ন সুন্দরদী মহল্লার।

ইতোমধ্যে ওই সংখ্যালঘু পরিবারটিকে উৎখাত করে তাদের সহায় সম্পত্তি দখলের জন্য নাটকীয় মামলা দিয়েও হয়রানী করা হয়েছে। ভূক্তভোগিরা তাদের পূর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া সহায় সম্পত্তি প্রভাবশালী দখলদারদের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। নতুবা সংখ্যালঘু ওই পরিবারের সদস্যরা আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই মহল্লার বাসিন্দা কানাই লাল চন্দর পুত্র দিপক চন্দ (৪০) অভিযোগ করেন, সুন্দরদী মৌজায় তাদের ভোগদখলীয় ৪৬ শতক সম্পত্তির মধ্যে উত্তর ধানডোবা গ্রামের হাসেম সিকদারের পুত্র মোক্তার সিকদার ওরফে চানাচুর মোক্তার ২২ শতক সম্পত্তির ভূয়া দলিল তৈরি করে মালিকানা দাবি করে।

দিপক আরও জানায়, তাদের ভোগদখলীয় সম্পত্তিত্বে থাকা একটি পুকুর জোরপূর্বক দখল করার জন্য গত ১৩ জুন মোক্তার তার সহযোগিদের মাধ্যমে ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাটের কাজ শুরু করে। এসময় তিনি (দিপক) মোবাইল ফোনে মোক্তারের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়ায় তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি, প্রাণনাশসহ দেশত্যাগের হুমকি দেয়া হয়। উপায়অন্তুর না পেয়ে এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দিপক। একইদিন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলরের মাধ্যমেও পৌর মেয়রের বরাবর সম্পত্তি রক্ষার জন্য লিখিত আবেদন করা হয়।

দিপক চন্দ বলেন, অভিযোগ দায়েরের পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রভাবশালী মোক্তার সিকদারের বালু ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যাবার পর পরই পূর্ণরায় বালু ভরাটের কাজ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে তিনি (দিপক) প্রথমে সহকারি পুলিশ সুপার ও পরে জেলা পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর থানা পুলিশ পূর্ণরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে আসে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোক্তার সিকদার ও তার সহযোগিরা তাকে (দিপক) বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশসহ দেশত্যাগের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।

প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দিপক চন্দ ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের সম্পত্তি রক্ষার জন্য মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

ভয়ভীতি, প্রাণনাশ ও দেশত্যাগের হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মোক্তার হোসেন বলেন, কারো সম্পত্তি দখল করে নয়; আমি আমার ক্রয় করা সম্পত্তিতে বালু ভরাটের কাজ শুরু করেছি।

দিপক চন্দর লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, বালু ভরাটের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়ে দুই দফায় থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। হুমকির বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share.
Exit mobile version