বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউপির এলাকাবাসীর নিজ অর্থায়নে সংস্কার শুরু হয়েছে।

খন্দকারটোলার ৮০০ মিটার রাস্তার কাজ।রাস্তাটির বেশি ভাগ জায়গাই গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে যায়। উপজেলা সদর থেকে এই রাস্তা দিয়ে সাধুবাড়ী, ঘোলাগাড়ী,উচরং,তালতা, কানাইকান্দর, মামুরশাহী সহ ১২টি এলাকার লোকজন যাতায়াত করে । অনেক শিক্ষার্থীরা সদরের প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে। তাছাড়া এই গ্রামেই রয়ে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ দুটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং একটি মাদ্রসা। প্রায় ছয় বছর ধরে দুর্ভোগের শিকার গ্রামবাসী প্রশাসনের কাছে বারবার ধরনা দিয়েও সহযোগিতা পাননি তারা। অবশেষে দুর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসী নিজেরা চাঁদা তুলে রাস্তাটি সংস্কারে এগিয়ে এসেছেন।

এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। বুধবার সকাল থেকে রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা রাস্তার একটি অংশে চলছে এই সংস্কার।
এই সংস্কার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক খাদেমুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির অন্তত ৮০০ মিটার সংস্কার
করা হচ্ছে। অনেক আগেই রাস্তার এই অংশের পিচ–পাথরের পাকা উঠে গর্ত হয়ে রয়েছে। গর্তের
গভীরতা ৫ থেকে ১৮ ইঞ্চি। এই স্থানে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধর সৃষ্টি হয়। তিনি জানান, এই
অংশের দুই পাশে উঁচু করে ইটের দেয়াল তুলে তার মধ্যে অন্তত দেড় ফুট বালু ফেলা হবে। এরপর
বালু ও ইটের খোয়ার মিশ্রণ ফেলে রোলার দিয়ে দাবিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে।
শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মাহমুদুল হাসান( লিটন) এই প্রতিবেদকে
বলেন, ছয় বছর ধরে রাস্তাটি নিয়ে আমরা চলাচলে দুর্ভোগে রয়েছেন এলাকাবাসী। রাস্তায় জমে
থাকা পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ নিয়ে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলছে। রাস্তার খানাখন্দের
অংশে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিনি আরো বলেল উপজেলা প্রকৌশলী
কার্যালয়ে একাধিকবার জানিয়েও কোনো উপকার পাননি তিনি এই প্রতিবেদকে জানান। শেষ পর্যন্ত
এলাকাবাসীর টাকায় রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুর রশিদ
সাথে যোগাযোগ করা হলে,তিনিএই প্রতিবেদকে বলেল রাস্তাটি আমাদের অধীনে।এই রাস্তার প্রায়
এক কিলোমিটার সংস্কার দরকার। এ জন্য সরকারের ব্যয় হবে অন্তত ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
রাস্তা সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে আমাদের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু
অনুমোদন না আসায় সংস্কার করাও সম্ভব হচ্ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা
হয়েছে। কমিটির আহŸায়ক নূরুল ইসলাম ও সদস্য সচিব খন্দকার ওসমান গণি।
কমিটির আহবায়ক নূরুল ইসলাম বলেন,রাস্তাটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা
প্রশাসনের কাজে সহযোগিতা চেয়েছি। কিন্তু সহযোগিতা না পেয়ে এলাকার মানুষজন এই সংস্কারের
কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন।

এই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করে খন্দকারটোলা সহ আরো ১২টি গ্রামের মানুষজন। এই সব
গ্রামের রাস্তার পাশে রয়েছে ১৩টি রাইস মিল, ১৫০টির মতো চাতাল এবং ২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এই রাস্তা দিয়ে অন্তত ৩০ হাজার পরিবারের লোকজন নিয়মিত চলাচল করতে হয়। কয়েক জন
পথো চারী বলেন, বাড়ির কোনো নারী/পুরুষ ও সন্তান অসুস্থ হলে তাঁকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে নেওয়া সম্ভব না। এলাকাবাসীর টাকায় এই সংস্কার শুরু করার মধ্যে দিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা দূর হবে।

রাস্তায় নিয়মিত চলাচল করে বেশ কয়েক জন যানবাহন চালক বলেন, রাস্তার দুর্ভোগ রোধে
আমরাও সংস্কারে এগিয়ে এসেছি। এতে রাস্তায় চলতে গিয়ে আমাদের যানবাহনগুলো ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

Share.
Exit mobile version