আমার একটি মামাতো বোন আছে। বয়স ছয় থেকে সাত বছরের হবে। ওর কথা বলার মধ্যে অনেক জড়তা আমি লক্ষ্য করেছি। একটু তোতলিয়ে কথা বলে। অথচ এ বয়সে কিন্তু ওর এ ধরনের সমস্যা থাকার কথা না।
এরকম আরো অনেক শিশু আছে যাদের কথা বলার সময় কথা আটকে যায় বা জড়তা সৃষ্টি হয়। আজ আমরা জানবো কথা বলার জড়তা কেন হয় এবং এটা দূর করার উপায় কি।
কথা বলার জড়তা কাটাতে অন্যান্য ভূমিকাঃ
একটি শিশু যখন কারও সঙ্গেই মিশতে পারছে না,বোঝাতে পারছে না নিজের কথা, তা হলে বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।
লাজুক, ভীরু স্বভাবের সন্তানদের নিয়ে বাবা-মা গোড়ায় খুব নিশ্চিন্ত থাকেন। কারণ, তারা হুটোপাটি করে না। কথা শোনে। কিন্তু এই অতিরিক্ত বাধ্য ভাবই পরবর্তী কালে সমস্যার হতে পারে। শিশুদের মাঝে কথা বলার জড়তাও দেখা দিতে পারে।
এসব সমস্যা থেকে শিশুকে রক্ষা করার জন্যে মা-বাবারা নিম্নের কাজগুলো অনুসরণ করতে পারেনঃ
সন্তান যদি সব সময় নিজেকে ঘরবন্দি করে রাখে, খেলতে যেতে না চায়, স্কুলে যেতে না চায়, তার যদি কোনও বন্ধু না থাকে তা হলে কিন্তু বিষয়টা চিন্তার। সন্তানের সঙ্গে কথা বলে বুঝুন সে হীনম্মন্যতার শিকার কিনা। তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলাই এ ক্ষেত্রে প্রথম করণীয়।
সন্তানকে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়ে যান। নিয়ম করে ওকে নিয়ে বাইরে বেরোন। সিনেমা দেখতে যান। তেমন হলে ওর কোনও বন্ধুকে বাড়িতেও ডেকে নিতে পারেন।
আপনার সন্তান কোন ধরনের সঙ্গ পছন্দ করে সেটা বুঝুন। ওকে তেমন পরিবেশে রাখার চেষ্টা করুন।
লাজুক স্বভাবের শিশুরা সাধারণত অনেকের মধ্যে গুটিয়ে থাকে। তবে কোনও এক জনের সঙ্গে কথাবার্তায় এদের অনেকেই খুব সপ্রতিভ হয়। ওর সঙ্গে তাই নিয়ম করে মুখোমুখি বসুন। নানা বিষয়ে কথা বলুন।
বহির্বিশ্বের নানা জিনিস সম্পর্কে আপনার শিশুকে অবহিত করার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই। এত কিছুর মধ্যে কোনও না কোনও বিষয় সন্তানের পছন্দ হবেই। তা নিয়েই ওর সঙ্গে চর্চা করুন। দেখবেন ও নিজের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছে।
উপরের কাজগুলো করার মাধ্যমেই একজন শিশুকে তার কথা বলার জড়াতা বা লাজুক ভাব থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব। তবে হ্যাঁ, অকারণে সন্তানকে বকাঝকা করবেন না। সমবয়সী কারও তুলনাও টানবেন না। এতে হিতে বিপরীত হয়।
তথ্য সংগ্রহ ঃ শাহজাহান সরকার
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, পাবনা।