শাহজাহান সরকার, ভ্রাম্যমাণ জেলাপ্রতিনিধি, পাবনা:- পদ্মা-যমুনা নদীর পাবনা অঞ্চলে পানি ব্যাপক আকারে ফুলে-ফেঁপে উঠছে। যমুনা নদীর পানি ইতোমধ্যেই বিপদসীমার প্রায় ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে পদ্মার পানি।
এ দিকে এ দুটি বড় নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার বেড়া, সুজানগর ও ঈশ্বরদী উপজেলায় ব্যাপক ভাঙন দেয়া দিয়েছে। এ সব এলাকার নিচু এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ায় শত শত বিঘা জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও জেলার পদ্মা-যমুনার তীরের মানুষ জানান, প্রতি বছর পানি বাড়ার সময় এবং পানি নেমে যাওয়ার সময় এ সব এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। সবচেয়ে ভাঙন প্রবণ এলাকা বেড়া উপজেলা এবং তার পরই রয়েছে সুজানগর উপজেলা।
এ ছাড়া ঈম্বরদী উপজেলাতেও পদ্মার তীর ভাঙনের কবলে পরে প্রতিবছরই। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এলাকাবাসীর তথ্যমতে, স্বাধীনতার পর থেকে ‘৯০-এর দশকের শেষ সময় পর্যন্ত একটানা ভাঙনে বেড়া উপজেলার মানচিত্রই পাল্টে যায়। সবচেয়ে বেশি ভাঙনের শিকার হয় ঐতিহাসিক নগরবাড়ি(নদী-বন্দর) এলাকা।
এ এলাকার নতুন ভারেঙ্গা, পুরান ভারেঙ্গা, রূপপুর, ঢালারচর ইউনিয়নের কয়েক’শ গ্রাম,মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় নগরবাড়ি ঘাট এলাকার হাজার হাজার ঘর-বাড়ি সহ স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা, হাট-বাজারসহ কয়েক’শ স্থাপনা এবং হাজার হাজার বিঘা জমি ও জনপদ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক পূর্বেই।
ভাঙন অব্যাহত থাকায় নগরবাড়ি ঘাট অন্তত ৮/১০ কিলোমিটার তীরে চলে আসে। এ সব এলাকার হাজার হাজার মানুষ সর্বশান্ত হয়ে যায় মুজিব বাঁধ এবং সরকারি উঁচু জায়গা ও খাস জায়গায় আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে।
জানা মতে, গত  দু’বছর ভাঙন কম ছিলো। পাশাপাশি বন্যাও তেমন দেখা নাই এ সব এলাকায়। কিন্তু এবারে পদ্মা-যমুনা তার অতীত আগ্রাসীরূপ নিচ্ছে। ফুলে-ফেঁপে উঠছে বড় দুটি নদীর পানি। এখন নগরবাড়ি এলাকায় সদ্য স্থাপিত মেরিন একাডেমি, নগরবাড়ি নদীবন্দর,হরিনাথপুর এস ই এস ডি পি মডেল হাইস্কুল  নির্মানাধীন বাফার গোডাউন সহ অসংখ্যা স্হাপনা নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ঐতিহাসিক ধোবাখোলা করোনেশন  স্কুল এন্ড কলেজের(নাটিয়াবাড়ি)অধ্যক্ষ জনাব মোঃ আবু বকর সিদ্দিক জানান নদী ভাঙন সঠিক সময়ে রোধ না করতে পারলে অত্র অঞ্চলের সম্ভাবনাময় উন্নয়ন মূলক স্হাপনা সহ ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এবং আগের মতো ভাঙন দেখা দিলে এ সব স্থাপনা হুমকির মুখে পড়বে এবং জনগনের দুর্ভোগের     শেষ থাকবেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
Share.
Exit mobile version