রফিকুল ইসলাম রনি, বরিশাল থেকে:- বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জে বর্ষা মৌসুমে প্রতি বছরই দেখা দেয় তীব্র নদীভাঙ্গন। তবে এ বছর ভাঙ্গনের তীব্রতা বেশি থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার মধ্যে অবস্থিত সন্ধ্যা নদীর পাড়ের হাজারো মানুষ।
প্রতিনিয়ত এ ভাঙ্গনে বাবুগঞ্জ উপজেলার মানচিত্রের পরিবর্তন ঘটছে। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে প্রতিবছর গৃহহীন ভূমিহীন হয়ে অতিদরিদ্র লোকের তালিকায় ঠায় নিচ্ছে শত শত মানুষ। এলাকার ভিটে-বাড়ি, গবাদি পশু ও কৃষিজমিসহ সর্বস্ব হারিয়ে ভাড়ার ভিত্তিতে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিচ্ছে এসব হতভাগ্য মানুষ। খরস্রোতা সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি বলে, বরিশাল-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি’র নিকট ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা কাছে নদী সন্ধ্যার তীর সংরক্ষণ এখন বাবুগঞ্জ উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাবুগঞ্জ উপজেলার ১নং বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ভাঙ্গারমূখ, চরহোগল পাতিয়া, চরউত্তর ভূতেরদিয়া সন্ধ্যার তীরবর্তী ওই দু গ্রামে অসহায় মানুষের ফসলী জমি, বসতভিটা নদীগর্ভে ও ঘড়বাড়ি, একটি মসজিদ বিলীনের পথে রয়েছে।
গ্রামের রাস্তাঘাট, শতাধীক পরিবারের বসতবাড়ি, গাছপালা ও আবাদি জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, কবরস্থান চরম হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া নদী তীরবর্তী উপজেলার আরও ১০টি গ্রামের হাজারো মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।
অপরদিকে, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর জন্মস্থান রহিমগঞ্জ গ্রাম প্রায়ই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রহিমগঞ্জ অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠের নামের মাধ্যমিক স্কুল, স্মৃতি ও যাদুঘর।
এদিকে নদী সন্ধ্যার তীব্রস্রোতে প্রতিনিয়ত ভাংছে বাহেরচর এলাকার কিছু অংশ, রমজানকাঠী লঞ্চঘাট হথে কারিকরবাড়ি পর্যন্ত।
বিশিষ্ঠ সমাজসেবক জহিরুল ইসলাম সুমন “ডেইলী রাঙা প্রভাত”কে বলেন, ভাঙনে ভাঙ্গারমূখ, চরহোগল পাতিয়া, চরউত্তর ভূতেরদিয়া গ্রামের অসহায় অনেক মানুষের আবাদি জমিসহ সব নদীতে চলে গেছে ও একটি মসজিদ নদী গর্ভের পথে রয়েছে এবং কয়েকটি বাড়িও এখন হুমকির মুখে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন ২০ বছর যাবত নদী ভাঙ্গনে ৩ টি গ্রাম বিলীন হবার পথে। স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা সব শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কারো কোন উদ্যোগ চোখে পরেনি। বিনীত অনুরোধ করবো এখনও যদি উক্ত বিষয়ে কোন উদ্যোগ না নেয়া হয় তাহলে বাকি গ্রাম গুলোও বিলীন হয়ে যাবে, সাথে সবুজ বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর হোগল পাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর হোগল পাতিয়া দাখিল মাদ্রাসা বিলীন হয়ে যাবে।
তাই রাষ্ট্রীয় সম্পদ স্কুল, মসজিদ ও মাদ্রাসা রক্ষার জন্য সন্ধ্যা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য স্থানিয় সাংসদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এলাকাবাসি জোরালো আহবান জানিয়েছন।