✪ জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক,বাবুগঞ্জ,বরিশাল ।
বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জে করোনা মহামারি সময়কালীন বাল্যবিবাহ ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজনদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বিআরডিবি মিলনায়তনে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ আজাদ।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও গার্লস অ্যাডভোকেসি এলায়েন্সের সহায়তায় আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় সুজন কমিটির উপজেলা সভাপতি খালেদা ওহাবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন ডলি, সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন, খানপুরা আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা আ.জ.ম শামসুল আলম।
বিমানবন্দর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সুজন সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্নার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ করিম লাবু, বাবুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক শাহিন মাহমুদ, চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের প্রভাষক মহিদুল ইসলাম জামাল, উপজেলা সুজন কমিটির সহ-সভাপতি প্রধান শিক্ষক সেলিম রেজা, রাকুদিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান তালেব, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশের ইউনিয়ন সমন্বয়কারী আবু হানিফ ফকির, ইয়ুথ লিডার ডালিয়া আফরোজ লিজা প্রমুখ।
এসময় মাধবপাশা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল-মামুন, বিমানবন্দর প্রেসক্লাব সম্পাদক মিয়া রোকনুজ্জামান সোহাগ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আল-আমিন হাওলাদার, কার্যনির্বাহী সদস্য রেজাউল করিম, মহিউদ্দিন খান রানা, মাসিক আয়কর বার্তার প্রতিনিধি মাসুদ হোসেন হাওলাদার, ছাত্রলীগ নেতা সফিকুল ইসলাম সিফাত, ইয়ুথ লিডার আশিকুর রহমান, সপ্তবর্ণ পাঠাগার সভাপতি রুবেল সরদার, শ্রমিক নেতা আল-মামুন, শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ আজাদ বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও বাবুগঞ্জে করোনার মহামারি সময়কালীন বেশকিছু বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। করোনার সুযোগে সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াই গোপনে এসব বিয়ে হয়েছে। আসন্ন ঈদুল আজহার সময়কালে বাল্যবিয়ের প্রকোপ আরও বাড়বে। তাই এই সময়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং বাল্যবিয়ে বন্ধে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন ডলি বলেন, ‘সঠিক সময়ে তথ্য না পাওয়ায় অনেক বাল্যবিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে গোপন রাখা হচ্ছে বিয়ের খবর। এমনকি পাত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অনেক জায়গায় রেজিস্ট্রি ছাড়াই হুজুর ডেকে পড়ানো হচ্ছে এসব বাল্যবিয়ে। তাই বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’
ওই মতবিনিময় সভায় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিসহ উপজেলার বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় এসময় জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের উদ্যোগে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ নীতিমালা এবং করোনাকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করা হয়।