পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মাদারীপুরের শিবচরের চরাঞ্চলে নদী ভাঙনের ব্যাপকতা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার ভাঙনে ধসে পড়া স্কুল ভবনটি প্রায়ই বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙনের প্রবণতা বাড়ায় স্কুলটির আশেপাশের মানুষ ঘরবাড়ি দ্রুত সরিয়ে নিচ্ছে। ভয়াবহ ভাঙন
ঝুঁকিতে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনসহ চরের ৪ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ।ভাঙন প্রতিরোধে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশনায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার শিবচরের পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে ৭ ইউনিয়নে। পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এস ই এস ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ভবনটি গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় বিলীন হয়ে গেছে।

কোনোমতে জেগে যেন ভবনটি হাফ নিচ্ছে। ছেড়ে যেতে চাইছে না আধুনিকতার ছোয়া পাওয়া চরাঞ্চলটিকে। নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করায় বিলীন হওয়া স্কুলটির আশেপাশের মানুষজনও ঘর-বাড়ি নিয়ে কোনোমতে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।

ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, একটি সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পদ্মা তীরবর্তী উপজেলার বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি ও চরজানাজাতে নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আড়িয়াল খাঁর তীরবর্তী সন্ন্যাসীরচর,
শিরুয়াইল, নিলখী ও বহেরাতলা দক্ষিণেও নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সরকারি হিসেবে নদীতে বিলীন হয়েছে সাড়ে ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি বলা হলেও এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানা যায়। এ সকল এলাকায় খোলা ২১টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

দুর্গত এলাকায় চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর পক্ষ থেকে খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। চিফ হুইপের নির্দেশনায় এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৫শ পরিবারের শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় আমিন মিয়া বলেন, পদ্মায় যেমন পানি বাড়ছে তেমন ভাঙনও বাড়ছে। তাই বাড়িঘর নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছি।

বিলীন হওয়া স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় স্কুলটি আরও ডুবে গেছে। এখন কোনোরকম মাথা দেখা যায়। ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করায় অনেকেই ঘর বাড়ি নিয়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন , চরের স্কুলটিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো রক্ষায় চিফ হুইপ স্যারের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ডাম্পিং করছে। তীব্র স্রোতে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ডাম্পিং এর ফলে ২/৩ বছর স্কুলটিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো রক্ষা করা গেলেও এ বছর আর সম্ভব হলো না।

Share.
Exit mobile version