কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ- নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় জমে উঠেছে নৌকা নৌকা কেনা বেচার হাট। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রেতা ও বিত্রেতাদের সরগম এখন উপজেলার বিশা ইউনিয়নের সমসপাড়ায় নৌকার হাট। সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও শুক্রবারে সমসপাড়া সুইজগেট খালে কেনা বেচা হয় বিভিন্ন প্রকারের বাহারি নৌকা।

এবার নৌকার চাহিদাও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে। জানা যায়, আশির দশকের প্রথম দিকে এ বাজারে নৌকা বিক্রির হাট শুরু হয়। সহ¯্রাধিক পরিবার দীর্ঘদিন ধরে নৌকা- বৈঠা তৈরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেআসছেন। বর্ষায় নদীমাতৃক এ অঞ্চলের কৃষিজীবি মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যতম হচ্ছে নৌক্ াআষাঢ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত বসে এ নৌকার হাট। সমসপাড়া বাজারে ও খালের পাড়ে রাস্তার ওপড়ে দুপাশ জুড়ে বিভিন্ন সাইজের নৌকার বেচা কেজনা চলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। নৌকার হাটে সমসপাড়া এলাকার নৌকা তৈরির কারিগর পরিমল সূত্রধর বলেন, বাপ – দাদার এ পেশা তিনি এক যুগ যাবৎ টিকিয়ে রেখে রেইনটি, মেহগিনি, কড়ই প্রভৃতি গাছের কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করে আসছেন। একটি নৌকা তৈরি করতে দু’জন ¤্রমিকের সময় লাগে তিনদিন ধরে আর প্রকার ভেদে খরচ হয় সাত হাজার টাকা। অপর দিকে এগুলো বিক্রি হয় ৬ হাজার থেকে ১২ হাচার টাকায়।

পাঁচুপুর বলরামচক এলাকার বিক্রেতা আনন্দ সূত্র ধর জানান, পাইকাররা এখান থেকে নৌকা কিনে অন্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন।। বিশেষ করে নাটোর জেলার হালতি বিল, সিংড়ার কলম এলাকার পাইকার বেশি আসে এখানে। শ্রমিকের মজুরি ও কাঠের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে ফলে লাভ কম হয় অপর দিকে বর্ষায় এবার নৌকার চাহিদা বেশি বলে বেচা কিনি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, ১৫টি নৌকা বাজারে এনেছেন ১০টির মত বিক্রিও হয়েছে।আরো বিক্রি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।

প্রতি বছর তিনি প্রায় ২৫শ থেকে ৩ হাজার নৌকা পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন। একাধিক নৌকা বিক্রেতারা জানান, এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বর্ষা ও পানির এ মৌসুমে ধান, বিলের শাপলা, শাক সবজি, নার্সারি ব্যবসা, পেয়ারা, আমড়া,পানি কচু,লেবু,কলা প্রভৃতি কাঁচা মাল ও ফসলের বেচাকেনা হয় নৌকায় করে। আর এ কারনেই এ সময় নৌকার কদর বেড়ে যায়। প্রতিহাটে দুই’ শ থেতে ৩শ’ নৌকা বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

ইজারাদার আব্দুল মান্নান মোল্লা জানান, বিগত বছর স্বাভাবিক ভাবেই নৌকা প্রতি ১০০ থেকে দেড়’শ টাকা করে খাজনা আদায় করা হয়। এবারও একই ভাবে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। ক্রেতা- বিক্রেতাদের নিরাপত্তাসহ সকল প্রকার অনিয়ম ও চাঁদাবাজী ঠেকাতে ইজারাদারের ৪-৫ জন সদস্য সচেষ্ট ভ’মিকা পালন করে যাচ্ছে। যদি কেউ বাজারের ভাব মূর্তি নষ্ট করার প্রয়াসে অনিয়ম করে তা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

Share.
Exit mobile version