রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ- আব্বু চলে যাবার পর আমি হাসপাতালের বাইরে গাড়িতে বসে সাইন বোর্ডের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আইসিইউতে আব্বু শুয়ে আছে শেষ দেখাও কি দেখতে পারবো না। সবাই বলে মন শক্ত করো।
আবেগঘন এই কথাগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন কিংবদন্তী সুরকার, সংগীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলীর মেয়ে কণ্ঠশিল্পী ও উপস্থাপক আলিফ আলাউদ্দিন।
সোমবার দুপুরে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে আলিফ আলাউদ্দিন আরো লিখেছন, বসে রইলাম গাড়িতেই। কাজী ফয়সাল আহমেদ (আলিফের স্বামী) ভিতরে গেল, আমি বললাম আব্বুকে গোসলের জন্য যখন এ্যাম্বুলেন্সে উঠাবে তখন দেখবো। দেখবোই। কারণ বুকে ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে।
তিনি যোগ করে লেখেন, মাকে তো হারিয়েছি, বাবাও নাই। রাত ৮:৩০ দিকে আব্বুকে বের করা হলো হসপিটালের বাইরে। এক দৌড়ে গিয়ে আব্বুকে দেখা। কি সুন্দর শুয়ে আছে কথা বলে না। মাথায় হাত বুলিয়ে নিষ্ঠুরের মতো বাসায় ফিরে আসলাম। সত্যি কাল থেকে আমি এতিম। আমার মা-বাবা নেই। সব পাল্টে যায় অল্প সময়েই। রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগীরা।
রোববার বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আলাউদ্দিন আলী। সোমবার সকালে প্রথমে তার মৃতদেহ বনশ্রীর বাসায় নেয়া হয়। এরপর নেয়া হয় খিলগাঁওয়ে আলাউদ্দিন আলির আদি বাড়িতে। সেখানে তাকে শেষবার দেখেন শিল্পীর স্বজনরা।
বাদ যোহর খিলগাঁও তালতলা মোড়ে নূর-এ-বাগ জামে মসজিদে জানাজা শেষে তাকে নিয়ে আসা হয় বিএফডিসিতে। সেখানে জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় এই কিংবদন্তীকে।
প্রসঙ্গত, আলিফ আলাউদ্দিনের মা ছিলেন নজরুলসঙ্গীত শিল্পী সালমা সুলতানা। তিনি ২০১৬ সালে মারা যান। আলাউদ্দিন আলীর এই সংসারে আলিফ ছাড়াও আরো তিন সন্তান আজমেরী আলী, শওকত আলী রানা, আফরীন আলী রয়েছেন। এছাড়াও বর্তমান স্ত্রী ফারজানা মিমির সংসারেও রয়েছে আদ্রিতা আলাউদ্দীন রাজকন্যা নামের কন্যা সন্তান।
এদিকে আলিফ আলাউদ্দিনের দুটো কিডনিই প্রায় ৮০ ভাগ অকেজো হয়ে গেছে। ১০ বছর ধরে পলিসিস্টিক কিডনি রোগে আক্রান্ত তিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। আলিফ ও তার পরিবারের সদস্যরা এখন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
Share.
Exit mobile version