তরিকুল দিন মজুরের কাজ ছেড়ে নছিমন চালানোর সুবাদে ব্যবসায়ীদের হাঁস বিভিন্ন জায়গায় আনা নেয়া করতেন। এতে করে তাদের কাছ থেকে হাঁস পালনের বিষয়ে ধারণা পান। ঋণ করে ১ হাজার ক্যাম্বেল জাতীয় হাঁসের বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করেন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
জেলার বদলগাছী উপজেলার আক্কেলপুর গ্রামের মাঠে স্বল্প পানিতে উন্মুক্তভাবে হাঁস ছেড়ে দিয়ে পালন করছেন তরিকুল। উন্মুক্তভাবে হাঁস পালন করায় সারা বছরই বিভিন্ন এলাকায় থাকতে হয়। যখন যে মাঠ ফাঁকা থাকে তখন সেই এলাকায় হাঁস নিয়ে যান।
বর্তমানে তার খামারে প্রায় দেড় হাজার ক্যাম্বেল জাতীয় হাঁস আছে। গত ১০ দিন আগে দিনাজপুর থেকে ৫শ’ হাঁস নিয়ে আসায় তা এখনো ডিমে আসেনি। এক হাজার হাঁসের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৮শ’ ডিম পান।
ফাটা জাতীয় ২শ’ পিস ডিম ৯শ’ টাকা ধরে ১ হাজার ৮শ’ টাকায় বিক্রি করেন। যেখানে প্রতিদিন মোট বিক্রি হয় ৯ হাজার টাকা। আর প্রতিদিন হাঁসের খাবার ও শ্রমিকসহ আনুষঙ্গিক খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা আয় হিসেবে মাসে আয় প্রায় দেড় লাখ টাকা।
খামারি তরিকুল ইসলাম বলেন, অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে পারিনি। শুধু নামটাই লিখতে পারি। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১১ জন। গত ১৫ বছরে হাঁস পালনের জীবনে নিজের নামে ২ বিঘা জমি কবলা করেছেন। এছাড়া ইটের বাড়ি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, হাঁস পালন করা যেমন কষ্ট, তেমন টাকাও আছে। হাঁস বেঁধে রেখে পালন করা ব্যয় বহুল। আর এ কারণে উন্মুক্তভাবে ছেড়ে দিয়ে পালন করতে হয়। যেহেতু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় যেতে হয় যার কারণে ডিমের উৎপাদন কম বেশি হয়ে থাকে। খাবার পেলে ডিমের উৎপাদন ভাল হয়। সারা বছরই বাড়ির বাহিরে থাকতে হয়। উন্মুক্তভাবে জলাশয়ে ছেড়ে দিয়ে পালন না করলে খরচ বেশি হবে এবং রোগ বালাই হবে।
খামারের নিয়মিত শ্রমিক এনামুল হক বলেন, গত নয় মাস থেকে এ খামারে কাজ করছি। প্রতিদিন তিনবেলা খাবারসহ পারিশ্রমিক পাই ৪শ’ টাকা। হাঁসকে নিয়মিত তদারকি ও খাবার দেয়াই আমার কাজ। তার মতো এ খামারে আরো তিনজন কাজ করেন।