মোঃ রফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম সংবাদদাতাঃ– আগামী ২০২১ সালের শুরুতেই কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে। আসন্ন পৌর নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও স্বতস্ত্র প্রার্থীরা আগাম মাঠে নেমে পড়েছে। কুড়িগ্রাম পৌরসভার বর্তমান মেয়র আব্দুল জলিল আবারো মেয়র নির্বাচনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে লাভের প্রত্যাশায় দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে সমর্থন ধরে রাখতে কাজ করে
যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই পৌর মেয়র আব্দুল জলিল তার মেয়াদকালীন সময়ে প্রায় ২০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত দলীয়
প্রার্থী হিসেবে মেয়র আব্দুল জলিল নির্বাচিত হলেও কুড়িগ্রাম পৌরসভার সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমে চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করতে
পারেননি।
বিগত সময়ে সাবেক পৌর মেয়র নুর ইসলাম নুরু তার দায়িত্বকালীন সময়ে প্রায় ৫৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের
দাবি। বর্তমান মেয়র আব্দুল জলিল সরকার দলীয় মেয়র হওয়ার পরও সাবেক মেয়রের অর্ধেক উন্নয়ন কাজেই করতে পারেননি। এ কারণে কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাধারণ মানুষের কাছে মেয়র আব্দুল জলিল উন্নয়নে ব্যর্থ মেয়র হিসেবে পরিচিতি
পেয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন লাভে দলীয় নেতাকর্মীর সমর্থকদের আস্থার জায়গাটুকুও তিনি ধরে রাখতে পারেননি। আওয়ামী
লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকরা জানায়, বর্তমান মেয়র আব্দুল জলিল এর কারণে কুড়িগ্রাম পৌরসভায় আওয়ামী লীগের ইমেজ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। পৌরসভার রাস্তায় তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। অধিকাংশ রাস্তাগুলো
চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থায় সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যে কারণে নাগরিকরা নানা ভাবে ভোগান্তির শিকার। মশক নিধনে ব্যর্থ,
পানির চাহিদা পুরণে ব্যর্থ, সড়ক বাতি দিতে ব্যর্থ, পয়ঃনিস্কাশন অর্থাৎ ড্রেনেজ ব্যবস্থায় পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যর্থ আর এই সকল ব্যর্থতার কারণে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংকে ধ্বস নেমেছে। আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে ব্যর্থ মেয়রের পরিবর্তে একটি উন্নয়নমুখী পরিবর্তনের জন্য আওয়ামী লীগের
নতুন প্রার্থীকে আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার প্রত্যাশা আওয়ামী লীগের তৃণমুল পর্যায়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কুড়িগ্রাম পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজিউল ইসলাম জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিগত পৌর নির্বাচনের পূর্বে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান কাজিউল ইসলাম দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলরদের ভোটে তিনি বিজয়ী হন। মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের কারণে কাজিউল ইসলাম মনোনয়ন বঞ্চিত হন। এবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রতিনিয়ত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাফর আলীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। আগামীতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে আশাবাদি। এদিকে পরিবর্তনের সাথে নতুন প্রজন্মের প্রিয় মুখ কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের ১ম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোস্তাফিজার রহমান সাজু সম্ভাব্য পৌর মেয়র প্রার্থী হিসেবে অনেক আগেই মাঠে নেমে পড়েছেন। চলতি বন্যা ও করোনাকালীন সময়ে দুর্যোগের সময় ব্যক্তি উদ্যোগে আলহাজ্ব মোস্তাফিজার রহমান সাজু দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে দুস্থ্য, অসহায় মানুষজনের পাশে সাহায্যে হাত বাড়িয়েছেন। তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় ৩ হাজার পরিবারকে ত্রাণ
সহায়তা দিয়েছেন। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুর হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন মোস্তাফিজার রহমান সাজু। তিনি আওয়ামী
লীগের রাজনীতিতে একজন বিশ্বস্থ, নির্ভরযোগ্য, পরিচ্ছন্ন, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে সব মহলে পরিচিতি ও আস্থা অর্জন করেছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন
পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থকদের প্রত্যাশা মোস্তাফিজার রহমান সাজু আসন্ন পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে অংশ নিলে বিজয় নিশ্চিত হবে এবং উন্নয়নের ধারা বেগবান হবে। অপরদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বিত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক তৃণমুল নেতাকর্মী, সমর্থকদের আস্থার প্রতীক সাবেক পৌর মেয়র আবু বকর সিদ্দিক। তিনি একক প্রার্থী হিসেবে এমনিতেই সুবিধাজনক অবস্থানেই রয়েছেন। আবু বকর সিদ্দিকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র নুর ইসলাম নুরু ইতোমধ্যে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে কোন সদস্য পদেও নেই। এ কারণে সাবেক পৌর মেয়র ও বর্তমান জেলা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক একক প্রার্থী হিসেবে কুড়িগ্রাম পৌরসভায় তার নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা
করছেন। আগামীতে বিএনপি পৌর নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজভীর আস্থা ভাজন নেতা হিসেবে পরিচিত আবু বকর সিদ্দিক বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করবেন বলে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থকদের দাবি। নির্বাচনে পরিবেশ সুষ্ঠু হলে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীর বিজয় নানা কারণে নিশ্চিত হবে বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি।
Share.
Exit mobile version