রাঙা প্রভাত স্পোর্ট ডেস্ক: কত অনায়াসেই না বলে দিলেন, আমাকে অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার হিসেবে ধরে নিন।’ মহেন্দ্র সিং ধোনি বলেই হয়তো এত অনাড়ম্বরে নিজের অবসরের কথা জানিয়ে দিলেন গতকাল। একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি ও আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতা অধিনায়ক ভারতকে টেস্টেও বিশ্ব সেরা বানিয়েছিলেন। ভারতের হয়ে যা অর্জন করেছেন, তেমন কিছু অবাস্তব বলেই ঠেকে। কীভাবে অবিশ্বাস্য সব সাফল্য ধোনির হাতে এভাবে ধরা দিল?
আসুন জেনে নেওয়া যাক যে ১০টি মুহূর্ত ধোনিকে ধোনি বানিয়েছে

১. ওয়ানডেতে ঝলমলে শুরু
২০০৪ সালে গোল্ডেন ডাক দিয়ে শুরু তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম বছরেই ক্যারিয়ারের গতিপথটা ঠিক করে নেন ধোনি। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৮ ও অপরাজিত ১৮৩ রানের দুটি ইনিংস মহাতারকা বানিয়ে দেয় তাঁকে। প্রথম বছরে ৪৯.৭২ গড়ে ৮৯৫ রান করেছিলেন ধোনি।

২. টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়
২০০৭ সালে আবির্ভাব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। আবির্ভাব অধিনায়ক ধোনিরও। এক ঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারকে নিয়ে বিশ্বকাপ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে তাঁর কিছু সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।

৩. উদ্‌যাপনে না
২০০৮, মেলবোর্ন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে ভারতীয় ক্রিকেটাররা। বাঁধ সাধলেন ধোনি, সতীর্থদের সরাসরি জানিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ওয়ানডে জিতে আবার কীসের উদ্‌যাপন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের জয় যে আর অঘটন নয়, সেই বার্তাই দিয়েছিলেন ধোনি।

৪. টেস্টের শীর্ষ দল ভারত
২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো ভারত টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠল ধোনির নেতৃত্বেই। পরের ১৮ মাসে ভারত শীর্ষেই ছিল।

৫. ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়
একটি বিশ্বকাপ জয়ে ভারতীয়দের ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো ধোনির নেতৃত্ব। বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে অতটা ভালো যায়নি তবে ফাইনালে রান তাড়ায় ব্যাটিংক্রমে নিজেকে তুলে এনে ৯১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে টেন্ডুলকারকে একমাত্র বিশ্বকাপ উপহার দেন।

৬. ১১২ মিটার লম্বা ছক্কা
২০১২ সাল। অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে জিততে শেষ ওভারে ১৩ রান দরকার ভারতের। ওভারের তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পেয়েই ক্লিন ম্যাকের করা বলটিকে উড়িয়ে দিলেন ১১২ মিটার দূরে। ক্যাপ্টেন কুল ধোনি ২ বল হাতে রেখেই দলকে জিতিয়ে দেন।

৭. টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি
২০১৩ সালে মাত্র চতুর্থ ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে যান ধোনি। ২৪ চার ও ৬ ছক্কায় সাজানো ২২৪ রানের ইনিংসে টেস্টে উইকেটকিপার-অধিনায়কদের সর্বোচ্চ ইনিংস হিসেবে টিকে আছে এখনো। তাঁর এই ইনিংসে ভর করেই ৮ উইকেটে ৪০৬ থেকে ৫৭২ রানে পৌঁছে ১৯২ রানের লিড পায় ভারত। সিরিজটা ধোনিরা জেতে ৪-০ তে।

৮. ট্রেবল জয়
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও জেতে ধোনির ভারত। আইসিসির প্রধান তিনটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট জেতা প্রথম অধিনায়ক হয়ে যান ধোনি।

৯. না দেখেই রানআউট
২০১৬ নিউজিল্যান্ড সফরে শর্ট ফাইনলেগে দৌড়ে গিয়ে উইকেটের দিকে না তাকিয়েই বল ছুড়ে স্টাম্প ভেঙে রানআউট করে দেন রস টেলরকে। প্রথাগতভাবে উইকেট দেখে বল ছুড়লে বেঁচে যাওয়ার যথেষ্ট সময় পেতেন টেলর। সেদিনই প্রথম এভাবে রানআউট করেছিলেন ধোনি।

১০. ধোনির আলোর গতি
২০১৯ সাল। এবারও ধোনির আলোর গতির কাছে হার মানলেন টেলর। ওয়ানডে সিরিজে কেদার যাদবের বলে একটু ভারসাম্য হারিয়েছিলেন কিউই ব্যাটসম্যান। তাঁর পেছনের পা’টা সেকেন্ডেরও ভগ্নাংশ ওপরে ছিল। অতটুকুই যথেষ্ট ছিল স্টাম্পিং করতে।

Share.
Exit mobile version