বেশি মিষ্টি খেয়ো না, ডায়াবেটিস হবে- এই কথাটি আমরা অনেক শুনি। কিন্তু আসলেই কী মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়?
যে কোনও সব্জি, ফল বা ডেইরি প্রোডাক্টের মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবেই শর্করা থাকে। তাই ফল বা সব্জির মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় সুগার পেয়েই যায়। চা বা অন্যান্য পানীয়ে যে মিষ্টি ব্যবহার করা হয় তা অতিরিক্ত সুগার। এছাড়াও কেক, সস বা রেডি টু ইট খাবারের মধ্যেও কিছু পরিমাণ মিষ্টি তো থাকেই। যাকে হিডেন সুগার বলে।
টাইমস ফুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডায়াবেটিসের জন্য শুধু সুগারই দায়ী নয়। পুরো জীবনধারণ প্রক্রিয়ার কারণে রোগটি হয়ে থাকে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে রক্তে গ্লুকোজের উপস্থিতি বেড়ে যায়। সেখান থেকেই ডায়াবেটিসের শুরু হয়।
ডায়াবেটিস সম্পর্কে মুম্বাইয়ের পুষ্টিবিদ কাজল ভাতেনা বলেন, মিষ্টি খেলেই যে ডায়াবেটিস হবে, এমন নয়। তবে যারা খুব বেশি পরিমাণে মিষ্টি খায় এবং কোনও ধরনের পরিশ্রম করে না তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
কাজল আরও বলেন, আপনি যদি প্রতিদিন মিষ্টি খেয়ে সঠিক নিয়ম মেনে পরিশ্রম করেন তাহলে ওই মিষ্টি আপনার কোনও ক্ষতি করবে না। তবে আপনি অলস হলে মিষ্টি কম খাওয়া কিংবা না খাওয়াই ভালো।
অস্ট্রেলিয়ার গবেষক সুইনবার্ন সেন্টারের ম্যাথিউ পেস বলছেন, তিনি নিশ্চিত নন যে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর শুধু শর্করাই প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, তা ছাড়া এমনও হতে পারে যারা বেশি সফট ড্রিংক পান করেন, তারা হয়তো শরীরচর্চা করেন কম । মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের সাথে তো এরও একটা সম্পর্ক থাকতে পারে।
খাদ্য বিশেষজ্ঞ রেনি ম্যাকগ্রেগর বলছেন, আমাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই সুষম খাবারের সংজ্ঞা ভিন্ন ভিন্ন। আসলে খাদ্যতালিকা থেকে চিনিকে বাদ দিয়ে দেয়াটা বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। এমন হতে পারে চিনি বাদ দিয়ে আপনি হয়তো অতিরিক্ত ক্যালরিসমৃদ্ধ কোন খাদ্য বেশি খেতে শুরু করলেন, তাতে ক্ষতিই বেশি।
ডায়াবেটিস থাকলে জীবন থেকে মিষ্টি বাদ এমনটা নয়। হেলদি এবং ব্যালেন্সড ডায়েটই পারে ডায়াবেটিসকে দূর করতে। অনেকেই মনভরে মিষ্টি খেয়ে সঙ্গে সুগারের একটা ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন। ভাবেন বুঝি সব নিয়ন্ত্রণে থাকল। এতে কিন্তু আখেরে আপনারই ক্ষতি। নিয়ম করে প্রতিদিন হাঁটুন, সুষম খাবার খান। মিষ্টিও খান। কিন্তু পরিমাণ মতো। অতিরিক্ত মিষ্টি, জাঙ্ক ফুড কিন্তু ওবেসিটির অন্যতম কারণ। যা অন্যান্য জটিল রোগের উপসর্গ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যাঁদের BMI ঠিকঠাক (বাচ্চারা বাদে) তারা কিন্তু প্রতিদিন ৬ চামচ করে চিনি খেতে পারেন। চা আর তরকারিতে কতটা খাবেন সেটা নিজেই ঠিক করে নিন।
তথ্য সংগ্রহেঃশাহজাহান সরকার
Share.
Exit mobile version