রফিকুল ইসলাম রনি :- বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার “বাটাজোর-শরিকল” রুটের সড়কটি অত্যন্ত ব্যাস্ততম এবং জনবহুল গুরুত্বপূর্ন একটি সড়ক। ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন প্রতিনিয়ত চলাচল করে আসছে, এই সড়কটি দিয়ে। কমপক্ষে তিনটি উপজেলার মানুষের যাতায়াতের জন্য সড়কটির গুরুত্ব অপরিসিম। সড়কটি দিয়ে চলাচলের ধারাবাহিকতায় দেখা যায়, সড়কটিতে প্রথম চলাচল করেছিলো পায়ে চালিত রিক্সা। এর পর চলাচল করে ইঞ্জিন চালিত পরিবহন মিশুক।

 

এর পরে ধীরে ধীরে সড়কটির গুরুত্ব আরো অধিক হারে বেড়ে যায়। তখন গৌরনদী, বাবুগঞ্জ এবং মুলাদী উপজেলার লোকজন বাটাজোর-সরিকল সড়কটিতে বাস চলাচলের জোড়ালো দাবি জানায় বরিশাল বাসমালিক সমিতিকে। এরপর বাসমালিক সমিতি এই বিশাল বিস্তৃত এলাকার জনপদে অবস্থা, পরিবেশ, গুরুত্ব জরিপ করে অবশেষে ২০০৬ সাল থেকে “বরিশাল-সরিকল” রুটে বাসচলাচলের অনুমতি দেয় আন্ত:বরিশাল জেলা বাস পরিবহন মালিক সমিতি। সেই থেকে সড়কটি দিয়ে দিবারাত্রী ২৪ঘন্টাই ভারি যানবাহন, বাস এবং হালকা যানবাহন চলাচল করে আসছে।

দীর্ঘ ১৬ বছরের মধ্যে একবার শুধু সড়কটি দায় সারারমত অপরিপক্কভাবে আংশিক মেরামত করা হয়েছিলো। মেরামতের তিন মাসের মধ্যেই সড়কের কালো পিস উঠে গিয়ে নিচের লালচে ইটের কনা বেড়িয়ে যায়। তারওপর দিয়েই অদ্যাবদি যাত্রীবাহি বাস চলছে যাত্রীদের জীবনের ঝুকি নিয়ে। বর্তমানে প্রসূতী মা, রোগী ও লাশবাহি এ্যাম্বুলেন্স তিন গুন ভাড়া ব্যাতিরেকে সড়কটিতে ঢুকতে রাজি হয় না। চোখে না দেখলে বিশ^াস করা যাবেনা যে- শতাধিক পুকুরের সৃষ্টি হয়েছে “বাটাজোর-সরিকল” সড়কটিতে।

অন্যদিকে সড়কটির সরিকল অংশ ভেঙ্গে খালে বিলিনের পথে রয়েছে। দূর্ঘটনা এখন সড়কটি নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সড়কটিতে এতো বড় বড় পুকুরের সৃষ্টি হয়েছে যে, সেগুলোকে গর্ত বা খানাখন্দক বলার সুযোগ নেই। কোন কোন গর্তে বর্ষা মৌসুমে হাটু পানি জমে থাকে। যানবাহন বাস চলাচল না করলে হয়তো সাধারন মানুষ ওই সব পুকুর গুলোতে মাছের চাষ বা ধান রোপন করতো। রাস্তার ওপরের শতশত গর্তগুলো এখন যাত্রী, রোগী ও প্রসূতী মায়েদের চলাচলের জন্য মরনফাঁদে পরিনত হয়েছে।

দীর্ঘ ৭/৮ বছর ধরেই সড়কটি দিয়ে যাত্রী নিয়ে হেলেদুলে চলছে বাস ও অন্যন্য পরিবহন। যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের বাস ট্রাজিডি এবং কেড়ে নিবে অগনতি যাত্রীর প্রাণ। কয়েকবার জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকায় এবং টেলিভিশন চ্যানেলে সড়কটির ক্ষতবিক্ষত চিত্র তুলে ধরলেও সং¯িøষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর পরেনি পুকুর সৃষ্ট বেহাল সড়কটির দিকে।

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বলে- দু:খ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী সকল যাত্রী সাধারন। ওদিকে বরিশাল জেলার মধ্যে গৌরনদী একটি জেলাসম উপজেলা। তিন উপজেলার মানুষের চলাচলের প্রধান মাধ্যম এই “বাটাজোর-সড়িকল” সড়কটির পুনঃনির্মান কাজ শুরু করা অতিব জরুরী। বর্তমানে বর্ষার কাদা-জলে সড়কটি একাকার হয়ে এক অবর্ননীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

Share.
Exit mobile version