সব সময় সাধারণ খাবার খেতে পছন্দ করতেন বিশ্বনবি। মানুষকে কম খাবার গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহ দিতেন। তিনি বলতেন, ‘একজনের খাবার দুজনের জন্য যথেষ্ট।’
তবে এমন খাদ্য খেতে বলতেন যে, যা সাধারণভাবে খুব দ্রুত হজম হয়ে যায়। শরীরের জন্য ক্ষতিকর, হজমের জন্য ক্ষতিকর, পরিপাকতন্ত্র ও শ্বাসতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর কোনো খাবারই তিনি গ্রহণ করতেন না। যেমন-
পাকস্থলীর ওপর চাপ পড়ে এমন খাবার তিনি খেতেন না। কাউকে খেতেও বলতেন না। আবার ফুসফুসের কার্যকারীতা হ্রাস পাবে এমন খাবার ও পাণীয় তিনি গ্রহণ করতেন না। অতিরিক্ত স্বাদ ও রুচির জন্য বেশি মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া বিরত থাকার উপদেশ দিয়েছেন তিনি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বাস্থ্য সম্মত খাবার পছন্দ করতেন। আর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো খাবার তিনি খেতেন না। আর তাহলো-
– চালাবিহীন আটার রুটি পছন্দ করতেন। কিন্তু মিহি ময়দার পাতলা চাপালা পছন্দ করতেন না।
– স্বাদ ও রুচির জন্য অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকা।
– যেসব খাবার দ্রুত হজম হয় না তা খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
– অতিরিক্ত স্বাদ ও রুচিকর খাবার বেশি না খাওয়া।
– অতিরিক্ত গরম খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত থাকা। যে খাদ্য থেকে ধোঁয়া বের হয়, এরূপ খাবার খেতেন না প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অতিরিক্ত গরম খাবার ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করতেন।

অতিরিক্ত গরম খাবার সম্পর্কে তিনি কখনও বলতেন, ‘আল্লাহ তাআলা আমাদের আগুন খাওয়ানি।’ আবার কখনও বলতেন, ‘গরম খাদ্যে বরকত নেই।’
শুধু তা-ই নয়, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও অতিরিক্ত খাবার খেতেন না। এক নাগাড়ে খাবার খাওয়ার উপর থাকতেও নিষেধ করেছেন। অতিরক্তি খাবার খাওয়া সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন-
‘মুমিন এক অন্ত্রণালীতে খাবার খায়। আর কাফের অবিশ্বাসীরা সাত অন্ত্রণালীতে খাবার খায়।’ (তিরমিজি)
তবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো খাবারকে খারাপ বলেননি। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও কোনো খাবারকে খারাপ বলেননি। তিনি কোনো খাবার পছন্দ হলে খেয়েছেন আর অপছন্দ হলে তা ত্যাগ করেছেন।’ (বুখারি)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অপছন্দনীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা। যেসব খাবার সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারি তা খাওয়া। খাবার গ্রহণেও মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। তবেই সুস্থ শরীর, দেহ ও মনের অধিকারী হবে মুমিন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক নিয়মে যথাযথ খাবার গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। অতিরক্তি গরম ও মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। খাবারের সময় নিজেদের সংযত রাখার তাওফিক দান করুন। খাবার নিয়ন্ত্রণ করে সুস্থ থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তথ্য সংগ্রহ: শাহজাহান সরকার

Share.
Exit mobile version