বিশেষ প্রতিনিধি : মেগা প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর নানামুখী কাজ চলছে। এর উভয় পাড়ে সংযোগসড়ক ও টোল প্লাজার কাজ শেষ। দেশের প্রথম প্রবেশ-নিয়ন্ত্রিত সিক্স লেন এক্সপ্রেসওয়ে ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। চলছে নদীশাসন, ড্রেজিংসহ বিভিন্ন স্থানে স্লপিংয়ের কাজ। সার্বিকভাবে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। দৃশ্যমান হচ্ছে সেতুর প্রায় ৫ কিলোমিটার। দিনরাত বিরতিহীন চলছে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ।

ইতোমধ্যে চীন থেকে ৪১টি স্প্যানের সবকটি প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছেছে। ৩৮টির ফিটিং সম্পন্ন হয়েছে, ৩টির কাজ চলছে। পিলারে উঠেছে ৩১টি, ৭টি ওঠার অপেক্ষায়। এ পর্যন্ত মূল সেতুর অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ, নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ এবং সার্বিক অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। পদ্মা সেতুর মোট ২ হাজার ৯২৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ৮৭০টি, ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ৪০০টি এবং ৪৩৮ ভায়াডাক্ট গার্ডারের মধ্যে ১৯৫টি স্থাপন করা হয়েছে।

বর্তমানে নদীর পানির লেভেল ও স্রোত স্প্যান বসানোর অনুকূলে না থাকায় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। যেহেতু পানি কমতে শুরু করেছে, ১৫ সেপ্টেম্বরের পর স্প্যান বসানোর কাজ পুনরায় শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর সব স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা করেন। এ সেতুর ৪২টি পিলারের সবকটির কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে সেতুর প্রায় ৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান। যে ৩টি স্প্যান ফিটিংয়ের কাজ চলছে সেগুলো পদ্মার মাওয়া পাড়ে পিলারে বসানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। পানি একটু কমলেই পরপর ওই ৩টি স্প্যান পিলারে বসে যাবে। মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে বাকি ৩টি স্প্যানের প্রস্তুতি কাজ চলছে। বর্তমানে পদ্মার পানির স্তর বেশ খানিকটা বেশি। এটা কমলেই স্প্যান বসানোর কাজ আবারও শুরু হবে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আওতায় গড়ে উঠেছে একটি প্রাণী জাদুঘর। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অধীনে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের দোগাছী পদ্মা সেতু সার্ভিস এরিয়া-১-এ চলছে প্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদের নমুনা সংগ্রহ। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য সারা দেশ থেকে প্রাণী জাদুঘরে নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ২২২টি প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

অপ্রয়োজনীয় জমি পতিত না রেখে দেশের আর্থ-সামাজিক ও আর্থিক সম্ভাবনার জন্য এ জমিতে আধুনিক উন্নতমানের ফার্ম গড়ে তোলা হবে। এখানে গড়ে উঠবে হংকং সিটির মতো শহর। যেখানে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম, পার্ক, জাদুঘর, আধুনিক শহরের সব রকম সুবিধা।

Share.
Exit mobile version