বিশেষ প্রতিনিধি: পাবনার সাঁথিয়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিক লালচাঁদ খাঁর বাড়িতে দিনভর অনশন করেছেন প্রেমিকা এক সন্তানের জননীয় শান্তা আক্তার (২৩)। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার ১ সেপ্টম্বর দুপুরে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের শামুকজানি চকপাড়া গ্রামে। ভন্ড প্রেমিক লালচাঁদ (২৮) শামুকজানি গ্রামের রাহেদ খাঁ‘র ছেলে। তিনি ঢাকা ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

অনশনরত জননী বেড়া উপজেলার সানিলা শাহপাড়া গ্রামের আতোয়ার প্রামানিকের মেয়ে। পরোকিয়া প্রেমিক মেয়েটির সম্পের্কে মামাত ভাই হয় বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে শামুকজানি গ্রামে প্রেমিকা শান্তা আক্তার এ প্রতিবেদককে জানায়, লালচাঁদের সাথে তার দীর্ঘ ছয় বছরের সম্পর্ক। চার বছর আগে শান্তাকে তার বাবা মা পাবনা বিয়ে দেয় বর্তমানে একটি ছেলে সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকেই লালচাঁদ শান্তাকে সে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়ে এক বছর আগে সেখান থেকে তার বিবাহ বিচ্ছেদ করায় এবং তাঁর কথামতই শান্তা তার নানা বাড়ি অর্থ্যৎ শামুকজানি গ্রামেই থেকে যায়। লালচাঁদ প্রতিরাতেই সেখানে যাওয়া আসা করতে থাকে। এভাবে কিছুদিন পার হলে প্রতিবেশি ও লালচাঁদের পরিবার তাদের শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি টের পায়। এরপর লালচাঁদ বুদ্ধি খাঁটিয়ে শান্তাকে নিয়ে বেড়া স্যানিলা পাড়া বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা অবস্থায় লালচাঁদ মাঝে মধ্যে দুই একদিনের জন্য ঢাকায় কলেজে যাওয়া আসা করত। তার বাড়ির লোকেরা জানত সে ঢাকাতেই পড়াশুনা করছে কয়েক মাস পর শান্তা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে দেরি আছে। আগে আমার রেজাল্ট হোক তাঁর পর।

পুনরায় আবারও লাঁলচাদের পরিবার বিষয়টি টের পেয়ে তাঁকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাকে সরে যেতে বলে। গত বুধবার (২৬ আগষ্ট) সন্ধায় সে গোপনে ভাড়া বাসায় পালিয়ে যায়। সে সময় তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন যাহার নাম্বার ০১৭৪১-২৮০৯৩৯ ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কিছু পোশাক রেখে যায়। এর পর থেকে তাঁর সাথে প্রতি দিনই যোগাযোগের চেষ্টা করলে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ২৫ আগষ্ট কথা হয়। এসময় বিয়ের কথা বললে সে জানায় তাঁর পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। তাঁকে বিয়ে করলে নাকি তাঁর বাবা মা তাঁকে ত্যজ্যপুত্র করবে বলে লালচাঁদ সাফ জানিয়ে দিয়ে ফোন কেটে দেন। তাঁর পর থেকে আর যোগাযোগ করতে পারেনি শান্তা। এ ঘটনার পর থেকে শান্তা লালচাঁদের বাড়িতে যোগাযোগ করলে স্থানীয় এক নেতা মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাও করে বলে মেয়েটি জানায়।

শান্তা জানান তাই নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন তিনি। প্রেমিক লাঁলচাঁদ তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলে ঘোষণা দেয় শান্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসি জানান, লালচাঁদ অল্প বয়সে দাঁড়ি রেখে হুজুরের লেবাস নিয়ে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করতেন কিন্তু তাঁর চরিত্র ভালো না বলে জানা গেছে। পাঁচ মাস আগে রাতের অন্ধকারে অন্যের ঘড়ে উকিঝুকি দেয়ার কারনে উত্তম মাধ্যম খেয়ে বাড়ি থেকে পালায় সে।

এ ব্যাপারে প্রেমিক লালচাঁদ এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, সে জানান শান্তা আমার সম্পর্কে আত্বীয় হয় আমি তার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। তবে তার সাথে আমার মাঝেমধ্যে ফোনে কথা হতো। আমাকে ফাসানোর জন্য তার এই ষড়যন্ত।

করমজা ইউপি চেয়াম্যান হোসেন আলী বাগচী বলেন, যে সব ছেলেরা এ ধরনের ঘৃণিত কাজ করে আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির কামনা করি। আমার নিকট যদি মেয়ে পক্ষের কেউ আসে তবে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ দেয় নাই। অভিযোগ পেলে আইন সহায়তা দেয়া হবে। তবে বিয়ে সাদী দেয়া পুলিশের কোন দায়িত্বে পড়ে না। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত মেয়েটি লালচাঁদের বাড়িতেই অবস্থান করছে বলে জানা যায়।

Share.
Exit mobile version