নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিয়ে, আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষার পুলিশে রূপান্তরিত হবো বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) কোতয়ালী মডেল থানাধীন ২০ নং ওয়ার্ড বরিশালে ৩৫ নং বিট পুলিশিং কার্যালয় শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে মাননীয় পুলিশ কমিশনার বিএমপি জনাব মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার মহোদয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফেস্টুন-পায়রা উড়িয়ে, বিট পুলিশিং কার্যালয় উদ্বোধন শেষে বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “তোমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ, তোমরা ব্রিটিশ পুলিশ নও, তোমরা জনগণের পুলিশ”। সেই জনগণের পুলিশ হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক -শ্রমিক, মেহনতী মানুষের আকাঙ্খা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, নিরাপদ, সুশৃঙ্খল সমাজ ব্যবস্থা নির্মান সহ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আইনমান্যকারী সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে একেকটি থানাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এরিয়াতে ওয়ার্ড পর্যায়ে ভাগ করে তৃণমূল পর্যায়ে সেবা পৌঁছে দিতে চাই।
প্রতিটি বিট পুলিশিং কার্যালয়ের বিট অফিসার আপনাদের সবচেয়ে কাছের মানুষ হয়ে যে-কোন সহযোগিতায় পাশে থাকবেন।
বিট এলাকায় ভালো লোক, মন্দ লোক, ওয়ারেন্টধারী, দুষ্কৃতকারীদের তথ্য দিয়ে সমাজের সু শাসন, শৃঙ্খলা রক্ষায় সাধারণ মানুষের অংশীদারত্ব বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
পুলিশ একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান, জনগণের নিরাপত্তার চাহিদা নির্ভূল পূরণই হলো পুলিশের কাজ।
নিরাপত্তা চাহিদা পূরণ না হলে, সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা না থাকলে মৌলিক চাহিদা অপূর্ণ থেকে যায়।
জনগণের সেবাদানে থানা যেমন আশ্রয়স্থল, তেমনি প্রতিটি বিট পুলিশিং কার্যালয় একেকটা সেবা স্থল। প্রতিটি বিট এলাকায় যদি নিষ্ঠার সাথে দুর্নীতিমুক্ত, নির্ভেজাল সেবা দিতে পারি, অপরাধ সংগঠনের আগেই জনগণের দোরগোড়ায় গিয়ে, জনসম্পৃক্ততা নিয়ে অপরাধীর বিরুদ্ধে সত্যিকারের প্রতিরোধ গড়তে পারি; তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের জনগণের পুলিশ হতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত কতিপয় পুলিশ রয়েছে, আমরা সেই পুলিশ চাই না, আমরা মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার জনবান্ধব পুলিশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পুলিশ দেখতে চাই। কারো বিরুদ্ধে কোনো অপেশাদারিত্বের অভিযোগ পেলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না।
কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের ঘাম ঝড়ানো টাকায় আমরা বেতন রেশন সহ সকল সুবিধা ভোগ করে থাকি, সেই জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে, নিজেকে রাষ্ট্রের একজন কর্মচারী হিসেবে নিজেকে পরিপূর্ণ সেবক হিসেবে নিয়োজিত রেখে কাজ করতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে কোথাও কোনো পুলিশ অনিয়ম করছে কি-না তা জানতে বিভিন্ন অভিযোগ মাধ্যম সহ প্রতিটি থানায় প্রতিমাসে ওপেন হাউজ ডে, কমিউনিটি পুলিশিং এর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । আপনাদের ফিডব্যাক পেলে আমরা আরও সমৃদ্ধ হবো।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ,জনগণকে সাথে নিয়ে জনবান্ধব পুলিশ উপহার দিতে চাই। মাননীয় আইজিপি মহোদয় এবিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।এই বিট পুলিশি সেবার মাধ্যমেই জনগণ তাঁর কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জনাব প্রলয় সিসিম বলেন, “পরিবর্তন সময়ের চাহিদা, তবে পরিবর্তন হবে ভালোর দিকে। বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে সেবা পৌঁছে দিয়ে আমরা বাংলাদেশ পুলিশ আমূল পরিবর্তন এনেছি।
জনগণের কাঙ্খিত সেবা দ্রুত দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বিট পুলিশিং বদ্ধপরিকর।
১৯১৮ সালের মহামারী আইনে পুলিশের কোনো দায়িত্ব না থাকলেও, পুলিশ এখন দেশের যেকোনো মহামারীতে সবার আগে জনগণের পাশে দাঁড়ায়।”
বিশেষ অতিথি প্রফেসর অবসরপ্রাপ্ত জনাব মোহাম্মদ হানিফ (সাবেক অধ্যক্ষ সরকারি বি এম কলেজ) বলেন, স্বাধীনতার অধিকার ভোগ করার পরিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, আমি আমার ৫৮ বছরে পুলিশের কোনো কর্তব্যে অবহেলা পাইনি, আমাদের উচিত পুলিশকে সহযোগিতা করা “।
সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপ-পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ বিএমপি জনাব মোঃ মোক্তার হোসেন পিপিএম সেবা, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা সহ থানার অফিসারবৃন্দ।