রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ মাঠ প্রশাসনে কর্মরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নিরাপত্তায় তাদের বাসায় সশস্ত্র আনাসার সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে ঢাকায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে দেখতে গিয়ে বৃহস্পতিবার ৩ সেপ্টেম্বর তিনি একথা জানান।

পরে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ফোনে বলেন, এ বিষয়ে মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইউএনওদের নিরাপত্তায় আনসার সদস্য নিয়োগ করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সরকারি কোয়ার্টারে মাঝরাতে দোতলার ভেন্টিলেটর ভেঙে দুই মুখোশধারীর হামলায় বাবাসহ গুরুতর আহত হন ওয়াহিদা খানম। পরে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিসি সম্মেলনে আমাদের এরকম একটা দাবি ছিল যে ইউএনওদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে আরও জোরদার করতে পারি। সেটি প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনেও আছে। আমরা ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও জননিরাপত্তা সচিব এবং অর্থ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমাদের ইউএনওদের বাড়িতে পাহারা দেওয়ার মতো আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য নিয়োগ করা হয় সে বিষয়টা আমরা নিশ্চিত করতে যাচ্ছি।

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে প্রতি উপজেলায় ইউএনওরা নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে আনসার সদস্য পাবেন। তবে কতজন করে পাবেন তা নির্ধারণ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, মাঠ প্রশাসনে কাজ করা ইউএনওদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ইতোপূর্বে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেটা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জননিরাপত্তা বিভাগকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, তাদের বাসার ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকে তারা ইউএনওদের নিরাপত্তার বিষয়ে কাজ শুরু করবে।

তিনি বলেন, আবার ইউএনও যদি কোথাও বেরও হন তাহলে নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে থাকতে পারে। সচিব, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের যেভাবে গানম্যান দেওয়া হয় সেভাবে দেওয়া হবে না। বাসার নিরাপত্তার জন্য আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য নিয়োগ করা হবে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা দেখে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী আহত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতের তাগিদ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সব ধরনের সহায়তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।

ইউএনও’র চিকিৎসা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে, যাতে সবচেয়ে ভালো ট্রিটমেন্ট তার জন্য আমরা নিশ্চিত করতে পারি। রাত ৯টায় তার অপারেশন হবে। এজন্য একটি টিমও গঠন করা হয়েছে। অপারেশনের পরে আশা করি তার অবস্থার ইমপ্রুভমেন্ট হবে।

Share.
Exit mobile version