লতানো গাছেরা
সূর্য তখন পূর্ব আকাশে
খুকির লাগানো লতানো গাছটা তখন ও একা বাইতে শিখেনি।
নিকটের ছায়ারা স্মরন করিয়ে দিলো তার বাচ্চা থেকে মেয়ে হওয়ার গল্প।
শৈশব আত্মহত্যা করে কৈশরে পা দিল চাপানো বয়ঃসন্ধিকাল।
সূর্য তখন ও মাথার উপর ওঠেনি।
চারা গাছটা কিছুটা পেচিয়ে উঠেছে ।তার মুখে পরেছে পাঁচিলের ছায়া।
বয়স বাড়ছে তের চৌদ্দ পাঁচিলের উচ্চতা ও বাড়ছে এক ফুট এক ফুট করে।
বড় গাছের ছায়ারাও দীর্ঘ হচ্ছে।
লতানো গাছটা বড়ো গাছের শাসনে কুকরে যাচ্ছে।
অনেকটা খুকির মতো।
সুর্য তখন মাথার উপরেই ছিল।
বড় বড় পাতার ফাঁক ফোকর দিয়ে কিছুটা আলো এসে পরেছে গায়।
তির তির করে বেড়ে ওঠা লতানো গাছের প্রাণে বসন্তের ঝিলিক দেয় ,
কৌতুহলের গন্ধ ভাসে বাতাসে,
লতানো গাছটা কিশোরী কে যুবতি হওয়ার গল্প শোনায়।
ফুলে ফুলে মৌ মৌ বাগিচা,
পতঙ্গরা ধেয়ে আসে গন্ধে,
আনন্দে গান গায় বুলবুলি,
পাশের বাগানে ও সে খবর পৌঁছে যায়।
মাথা চারা দিয়ে ওঠে আগাছার দল।
নিকটের ছায়ারা উদ্ধিগ্ন।
লাল হতে থাকে শুভাকাঙ্ক্ষী চোখ।
সূর্য মুখ ফিরায় পশ্চিম আকাশে।
আগাছারা শুষে নেয় লতানো গাছের স্বপ্ন।
লতানো গাছের আর পাঁচিলে ওঠা হয় না। মুখ থুবড়ে মাটিতে শিকড় ছড়ায়,
অযত্নে, অবহেলায় বর্ষার জলে আত্মাহুতি দেয় লতানো গাছ।
যুবতি ছাদকে আকাশ ভেবে মেঘের ছবি আঁকে,দেয়ালে চাপা পরে উড়ার বাসনা,জানালার গ্রিলে আঁটকে যায় স্বপ্ন,আকাঙ্খা গুলি মোটা পর্দা হয়ে দরজায় ঝুলে থাকে।
আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন সুঁইয়ের ফোঁড়ে ফোঁড়ে বন্দি থাকে নকশিকাঁথায়।
আর এভাবেই লতানো গাছেরা আত্মহত্যা করে সীমাবদ্ধের যাতায়।