বিশেষ প্রতিনিধিঃ পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে গ্রামবাসী চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে দুই কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করছেন। এলজিইডি, স্থানীয়ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ধরনা দিয়েও কাজ না হওয়ায় এভাবে তারা রাস্তা মেরামতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করমজা ইউনিয়নের ৯ নং ওযার্ডের সোমাশনারী পূর্বপাড়া থেকে বাগজান পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ করা হয় প্রায় ২৫ বছর আগে। দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ রাস্তাটির কিছু অংশ ইট বিছানো এবং বাকি বেশির ভাগ অংশই কাঁচা। নির্মাণের পর থেকে এ রাস্তায় তেমন কোনো সংস্কারের কাজ হয়নি। ফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটির মাটি ধুয়ে যায় ও বিভিন্ন অংশ ভেঙে পরে। বর্তমানে এ রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অথচ এই রাস্তাটি সোমাশনারী, বাগজান, কুশিয়ারা, তারাপুর ও পাইকরহাটিসহ সাত-আটটি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধান মাধ্যম।

এলাকাবাসী আরও জানান, রাস্তাটি পাকাকরণসহ এর সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে তারা বারবার ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বরং দিনে দিনে এ রাস্তাটি আরও বেশি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এবারের বর্ষায় এ রাস্তা দিয়ে চলাচল প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
রাস্তাটি মেরামতে দায়িত্বশীল কোনো পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে এলাকাবাসী অবশেষে নিজেরাই এটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছেন। রাস্তা মেরামতের জন্য মূলত সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছেন সোমাশনারী গ্রামের বাসিন্দারা। প্রথমে তারা নিজেদের মধ্য থেকে চাঁদা তুলে অন্য গ্রামের বাসিন্দাদেরও রাস্তা মেরামতে উদ্বুদ্ধ করেন।
গত চার-পাঁচদিন ধরে সোমাশনারীসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দারা চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিদিন পালা করে শতাধিক গ্রামবাসী এভাবে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা মেরামতের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
রাস্তা সংস্কারের জন্য এলাকাবাসীকে সংগঠিত করতে যে কয়েকজন মূল ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে সোমাশনারী গ্রামের করমজা ইউপি যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মিলন অন্যতম। তিনি বলেন, ‘রাস্তা মেরামতের জন্য আমরা অনেকের কাছে ধরনা দিয়েছি। শেষে নিরূপায় হয়ে আমরাই চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি মেরামত করছি। এ পর্যন্ত আমাদের প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুরো দুই কিলোমিটার মেরামত করতে আরও অনেক টাকার প্রয়োজন।’
করমজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী বাগচী বলেন, ‘ওই রাস্তাটি এলজিইডির আওতাভূক্ত। রাস্তাটি পাকাকরণসহ মেরামতের জন্য ইতিমধ্যেই আমরা এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়কে জানিয়েছি।’
এলজিইডির সাঁথিয়া উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘ওই রাস্তাটি সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে হলেও সেটি এলজিইডির বেড়া কার্যালয়ের আওতাভূক্ত। এ ব্যাপারে ওই এলাকার লোকজন আমার কার্যালয়ে এলে তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলেছি।’
তবে এ ব্যাপারে এলজিইডির বেড়া উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘রাস্তাসহ ওই এলাকাটি বেড়া নয় সাঁথিয়া কার্যালয়ের আওতাভূক্ত। প্রকৃতপক্ষেই ওই রাস্তাটি পাকা হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আমি সাঁথিয়া প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলব বলে জানান।

Share.
Exit mobile version