বিশেষ প্রতিনিধি : ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ খবরের পর থেকেই দেশের সর্ববৃহৎ পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা পাবনায় দফায় দফায় বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
প্রতি কেজি দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেড়েছে। খুচরা পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে।
পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে এবং সিন্ডিকেট রুখতে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে পাবনা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে (অতিরিক্ত সচিব) সার্বিক নির্দেশনা ও জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে বুধবার ১৬ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুস সালাম এর নের্তৃত্বে পাবনার পিঁয়াজ ভান্ডারখ্যাত সুজানগর বাজার ও পেঁয়াজের আড়ত এবং খুচরা বাজারে অভিযান চালিয়ে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

বাজার স্বাভাবিক রাখতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।

পাবনায় চলতি বছরের আগষ্ট মাসেই পিঁয়াজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা প্রতি কেজি। এক মাসের ব্যাবধানেই এমন দাম বাড়ায় হতাশ সাধারণ ক্রেতারা।
পাবনা কাঁচা বাজারে সবজি ব্যাবসায়ী সিদ্দিক বলেন, দুই দিন আগে আমি পাবনার আরিফপুর হাট থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা মণ দরে কৃষকের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনেছি।
এখন আমার পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে কমপক্ষে সাড়ে তিন হাজার টাকা মণ বা ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হবে।
এ বাজারের, আরেকজন সবজি ব্যাবসায়ী বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কী করার আছে? আমরা বেশি দামে কিনছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
পাবনায় পেঁয়াজের বড় বাজার বেড়া করমজা হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাটে প্রচুর পেঁয়াজ সত্বেও বাজার চড়া।

ঢাকার কারওয়ান বাজারের মজিদ ব্যাপারী বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে তিন হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার ৩০০ টাকা দরে ৩০০ মণ পেঁয়াজ কিনেছেন। এ রকম অনেক পাইকার দাম বাড়ার পরও পেঁয়াজ কিনছেন।
পাবনা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, দেশের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় পাবনার বেড়া, সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলায়।
দেশে মোট পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪১২ টন। এর মধ্যে শুধু পাবনায় উৎপাদন হয় ছয় লাখ ৪৫ হাজার ৫৮০ টন। এর পরও ৯ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
দাম বাড়ার প্রবণতা হলে কৃষকরাও বেশি দামের জন্য ঘরে মাচা তৈরি করে পেঁয়াজ মজুদ করে রাখেন।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, পাবনা জেলা বা দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই; তাই মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই কাম্য নয়। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে বাজার মনিটর করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত রাখা হবে।

Share.
Exit mobile version