রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ বেশকিছু মাস আগে বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দা তুলসী রানী দাসী একটি হাতি কিনে পালন করার জন্য ‘দৈব নির্দেশ’ পান। সেই তথ্য তিনি জানান তার স্বামী দুলাল চন্দ্র রায়কে।

এরপর দুলাল চন্দ্র রায় জমি, গরু, বাড়ির গাছ বিক্রি করে, কিছু জমি বন্ধক রেখে সোমবার সাড়ে ১৬ লাখ টাকা খরচ করে মৌলভীবাজার থেকে হাতি কিনে নিয়ে এসেছেন।

এখন সেই হাতি দেখার জন্য আশেপাশের গ্রামের মানুষ উপচে পড়ছে জেলার সদর উপজেলার রথিধর দেউতি গ্রামের বাসিন্দা রায়ের বাড়িতে।

তিনি বলছিলেন, ”গত ১০ বছর ধরে তার স্ত্রী দেবতাদের উপাসনা করেন। পরমেশ্বর আমার স্ত্রীর ওপর ভর করেছে। তার মাধ্যমে তিনি আমাদের নানা কথা শ্রবণ করান। এর আগেও তিনি আমাদের জীব সেবা করতে বলেছেন।”

”কয়েকমাস আগে থেকে পরমেশ্বর আমার স্ত্রীর মাধ্যমে হাতি কিনতে বলেন। এরপর নানা জায়গায় খোঁজ করে, টাকা পয়সা জোগাড় করে হাতি কিনে এনেছি।”

এর আগে স্ত্রীর কাছ থেকে এরকম ‘দৈব নির্দেশ’ পেয়ে তিনি ঘোড়া, রাজহাঁস, ছাগল, খরগোশ কিনে দিয়েছিলেন। যদিও এসব প্রাণী কেনার পর থেকে শুধুমাত্র বাড়িতেই থাকে। যেমন, এক বছরের আগে ঘোড়া কিনলেও তার পরিবারের কেউ সেটায় চড়ে কোথাও কখনো যায় নি।

কৃষক দুলাল চন্দ্র রায়ের কয়েক বিঘা কৃষিজমি আর সুপারির ব্যবসা আছে। তার মালিকানায় থাকা ১১ বিঘার জমির মধ্যে দুই বিঘা হাতি কিনতে বিক্রি করে দিয়েছেন। এসব জমিতে প্রধানত ধানের চাষ করা হয়। তার বাড়িতে একটি টিনের চালা আর একটি মাটির তৈরি ঘরে দুই সন্তানসহ এই দম্পতি বসবাস করে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন।

হাতি লালনপালন অনেক ব্যয়বহুল। খাবার ছাড়াও হাতির যে মাহুতকে এনেছেন দুলাল চন্দ্র, তাকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে মজুরি দিতে হবে। তবে স্থানীয় দুইজনকে হাতি পালনের প্রশিক্ষণ দিয়ে তিনি চলে যাবেন।

এসব খরচ কীভাবে বহন করবেন, জানতে চাইলে তিনি বলছেন, ”…(স্ত্রীর মাধ্যমে) পরমেশ্বরকে আমি বলছিলাম যে, হাতির খরচ কেমনে চালাবো, কেমন করে লালন পালন করবো? তিনি বলেছেন, ‘আমি তো আছি। তুমি হাতি কিনে আনো’। তিনি আছেন, তিনি দেখবেন। তেনার ওপর বিশ্বাস করে আছি।”

তবে তিনি আশা করছেন, হাতি যেহেতু প্রধানত কলাগাছ খায় এবং তার বাড়ি ও আশেপাশে অনেক কলাগাছ আছে।

দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেবতা যতদিন রাখতে বলবেন, ততদিন হাতি বাড়িতে থাকবে’।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Share.
Exit mobile version