সোনামণির যত্ন

অধিকাংশ শিশুর চোখেই ঘুম আসতে চায় না রাতের বেলায়। তাই তার সঙ্গে জেগে থাকতে হয় পরিবারের সদস্যদেরও। বিশেষ করে বাচ্চা যতদিন না বড় হচ্ছে, ততদিন তো রাতে মায়ের ঘুম হয় না বললেই চলে

অর্থাৎ বাড়ির ছোট্ট সদস্যটির চোখে ঘুম আনতে বেশ বেগ পেতে হয় পরিবারের অন্য সদস্যদের। যাঁরা ইতিমধ্যেই বাচ্চাদের বড় করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই একই অভিজ্ঞতা। তাই যাঁদের বাড়িতে শিশু রয়েছে এবং তাকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা তাঁদের জন্য রইল কিছু টিপস্। জেনে নিন, শিশুকে ঘুম পাড়ানোর কিছু সহজ উপায়।

১) শিশুরা সাধারণত দিনের বেলায় ঘুমায়। স্বাভাবিকভাবেই রাতে সহজে ঘুম আসতে চায় না। তাই শিশুদের ঘুম পাড়াতে হলে অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন। যতক্ষণ না তার চোখে ঘুম আসছে, ততক্ষণ তার পাশে শান্ত হয়ে শুয়ে থাকতে হবে আপনাকেও। ছেড়ে চলে গেলেই কিন্তু তার ঘুমঘুম ভাবও উধাও হয়ে যাবে।

২) হালকা গলায় ঘুম পাড়ানি গান গেয়ে বা ছড়া শোনাতে শোনাতে ঘুম পাড়ানো যেতে পারে আপনার ছোট্ট সোনাকে।

৩) শিশুকে ঘুমানোর জন্য বিছানায় নিয়ে যাওয়ার আগে তার পোশাকের দিকে খেয়াল রাখুন। শীতকাল বলে গায়ে অনেক পোশাক পরিয়ে, আবার তার উপর দিয়ে যদি লেপ বা কম্বল জাতীয় গরম জিনিস ঢাকা দেন, তাহলে কিন্তু তার গরম লাগতে বাধ্য। আর গরম লাগলে সহজে ঘুমাতে পারবে না শিশু। তাই ঘরের আবহাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে সেই অনুযায়ী পোশাক পরান।

৪) বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ঘরের আলো নিভিয়ে দিন। পরিবর্তে অন করতে পারেন নাইট ল্যাম্প। আলো জ্বললে বাচ্চারা আর চোখের পাতা ফেলতে চায় না।

৫) অনেক সময় আলতো স্পর্শে ঘুম আসে। তাই শিশুর মুখে, পিঠে হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়ানো যেতে পারে। ভালো হয় যদি শিশুর মুখের উপর হালকা নরম পালক জাতীয় জিনিস বা টিসু পেপার বুলিয়ে দেওয়া যায়। এভাবেও ঘুম পাড়ানো যেতে পারে।

৬) খেয়াল রাখবেন সময়ে সময়ে যেন বাচ্চার ন্যাপি বদলাতে ভুল না হয়। দেখা গেল অনেকক্ষণ হয়তো ন্যাপি বদলানো হয়নি। অথচ ন্যাপি ভিজে গেছে। তাতে শিশুর ঘুম নষ্ট হতে পারে।

৭) শুধু বিছানায় বাচ্চার ঘুম নাও আসতে পারে। তাই মায়ের কোলে বা দোলনায় শুইয়ে দোল দিলেও অনেক সময় তাদের চোখে নেমে আসে ঘুম।

৮) বাচ্চা একটু বড় হলে টেডি বিয়ার জাতীয় নরম খেলনা দিয়েও ঘুম পাড়াতে পারেন। বিছানায় তার হাতের নীচে খেলনা রেখে বোঝাতে হবে যে তার সঙ্গে রয়েছে ওই খেলনাটি। সে ঘুমালে খেলনাটিও তার সঙ্গে ঘুমাবে। এভাবেও ঘুম আনার চেষ্টা করতে পারেন।

৯) বাচ্চা ঘুমিয়ে পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে তার কাছ থেকে সরে যাবেন না। তাতে তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। শিশুরা ভীষণ স্পর্শ অনুভব করতে জানে। হালকা ঘুমের মধ্যে যদি সে বুঝতে পারে যে তার পাশে কেউ নেই তাহলে ভয় পেয়ে কেঁদে উঠতে পারে। তাই যদি বিছানা ছাড়তেই হয় তাহলে বাচ্চা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলে তারপরেই সেখান থেকে সরুন।
তথ্যসংগ্রহঃশাহজাহান সরকার

Share.
Exit mobile version