রাঙা প্রভাত অনলাইন ডেস্ক।। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদ হারানোর পর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেলে যেতে হতে পারে। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাহী সুবিধার আওতায় সেগুলোকে ঠেকিয়ে রেখেছেন তিনি। পদ হারানোর পর এই সুবিধা আর তার থাকবে না।

হোয়াইট হাউজের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড পত্রিকা মিরর জানিয়েছে এ খবর। পার্স টুডে সেই খবর উদ্ধৃত করে বলেছে, ট্রাম্প এখন যে ভোট চুরির অভিযোগ তুলছেন, তার একটি কারণ হলো জেলে যাওয়ার ভয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফেডারেল প্রসিকিউটর হ্যারি স্যান্ডিক বলেন, ‘ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাওয়ার পর প্রসিকিউটর ও সাক্ষীদের পক্ষে মামলা চালিয়ে যাওয়া সহজ হবে। ফৌজদারি মামলায় আদালতে হাজির হওয়ার জন্য উচ্চতর সুরক্ষা দাবি করতেন ট্রাম্প। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদে না থাকলে এমন দাবি তিনি করতে পারবেন না।’

গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্টের আইনজীবী দল ম্যানহাটন অ্যাটর্নি কার্যালয়ের আদালতে হাজির হওয়ার একটি আদেশ প্রত্যাহারের চেষ্টা চালায়। ট্রাম্পের আট বছরের কর প্রদান নিয়ে মামলার শুনানিতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল তাকে। এ ছাড়া নিউইয়র্কের আইনজীবীরা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন প্লেবয় মডেল কারেন ম্যাকডোগাল ও পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অর্থ প্রদানের অভিযোগের ক্ষেত্রে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন নথি জালিয়াতি করেছে কি না। ম্যানহাটনে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

এ ছাড়া রয়েছে আরও একাধিক মামলা। ধর্ষণ মামলাই রয়েছে কয়েকটি। ক্ষমতা হারালে তার বিরুদ্ধে কয়েকজন নারীর যৌন নিপীড়নের মামলার পথও উন্মুক্ত হবে। তাদের মধ্যে রয়েছেন লেখক ই জিন ক্যারল। তিনি অভিযোগ করেছেন, ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝিতে ম্যানহাটনের বার্গডর্ফ গুডম্যান ডিপার্টমেন্ট স্টোরের ট্রায়াল রুমে তাকে ধর্ষণ করেছেন ট্রাম্প। এই অভিযোগের বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আমার টাইপের না। ক্যারলের ধর্ষণের মামলায় ডিএনএ নমুনা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

সামার জারভোস নামের আরেক শিক্ষানবীশের মামলাও শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০০৭ সালে ট্রাম্প তাকে যৌন নিপীড়ন করেছেন। এই অভিযোগকে কাল্পনিক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।

তবে সবচেয়ে বড় গুরুতর ও দ্রুত বিপদ নিয়ে আসতে পারে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা। এই মামলায় ট্রাম্প দায়িত্বে থাকা সময়ের। প্রসিকিউটররা বাণিজ্যিক লেনদেন ও করের নথি চাইলেও ট্রাম্প তা প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন। অন্তত পাঁচটি ক্ষেত্রে আদালত বলেছেন, এই অনুরোধ বৈধ। আরেকবার ক্ষমতায় থাকলে এসব মামলা চালিয়ে নেওয়ার পথ হয়তো চিরতরে বন্ধ করার পরিকল্পনা ছিল ট্রাম্পের। কিন্তু সে সময় হয়তো তিনি আর পাচ্ছেন না।

পরাজিত হলেও ২০ জানুয়ারি জো বাইডেন শপথ গ্রহণের আগে শেষ দিনগুলোতে হয়তো যেকোনো ফেডারেল অপরাধ থেকে নিজেকে দায়মুক্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন ট্রাম্প। এরপরও ক্ষমতা ছাড়ার পর অন্য কয়েকটি মামলায় বড় ধরনের জেল-জরিমানার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।  এখন এটাই তার বড় ভয়।

পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে জয়ের মধ্য দিয়ে জো বাইডেন ২৭৩টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৩টি ইলেকটোরাল ভোট।

Share.
Exit mobile version