স্পোর্ট ডেস্ক।। নিজেদের ইতিহাসে পঞ্চম শিরোপা জিতলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। করোনা জর্জরিত দুবাই আসরে দিল্লিকে হারালো ৫ উইকেটে। প্রথমে ব্যাট করে ১৫৬ রান করে দিল্লি ক্যাপিটেলস। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইন্ডিয়ান্স শিবির। এটা তাদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়।
টস জিতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রেয়াস আইয়ার। ফাইনালের মঞ্চে টার্গেটের পেছনে না ছুটে, প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতেই বেশি উৎসাহী ছিলো দিল্লি। কিন্তু, অধিনায়কের মন রাখতে পারলোনা টপ-অর্ডার।
ম্যাচের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মার্কাস স্টয়নিস। আনন্দে ফেটে পড়েন ট্রেন্ট বোল্ট। এরপর প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিতে ধাওয়ানের সঙ্গী হন রাহানে। কিন্তু, এদিনও ব্যর্থ ভারতের ওয়ানডে দলের সহ-অধিনায়ক। হয়েছেন বোল্টের দ্বিতীয় শিকার।
সঙ্গী হারিয়ে অধিনায়কের সাথে জুটি বাঁধেন ধাওয়ান। কিন্তু শিরোপার মঞ্চে আটকাতে পারেন নি নিজের নার্ভকে। জায়ান্ত জাদভকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বোল্ড শেখর। ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে দিল্লি।
শ্রেয়াসকে সঙ্গ দিতে আসেন রিশভ পান্ত। দুজনের ব্যাটে ছন্দ খুঁজে পায় ক্যাপিটেলস। মাঠের চারদিকে বাউন্ডারি আর ওভার-বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছোটান তারা। বোলার-ফিল্ডার বদলেও, লাভের লাভ হচ্ছিলোনা ইন্ডিয়ান্সদের।
মুম্বাইকে তুলোধুনা করে ফিফটি তুলে নেন রিশাভ। তবে, এরপরই ভাঙে তার প্রতিরোধ। কোল্টারনাইলের ওপর চড়াও হতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন তিনি।
পান্তকে হারালেও, অবিচল ছিলেন শ্রেয়াস। অন্য পাশে, হেটমায়ার, অক্ষর, রাবাদাদের আসা যাওয়ার মিছিলেও, নিজের ফিফটি তুলে নেন দিল্লি অধিনায়ক। ৬৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে পৌঁছে দেন ১৫৬ রানে।
জবাব দিতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। অশ্বিনকে ছয় মেরে রানের খাতা খোলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। স্পিনের পর পেসারদের ওপরও চড়াও হন রোহিত আর ডি কক। রাবাদা-নর্টজে কেউই পাত্তা পায়নি তাদের সামনে। বলগুলোর আশ্রয় হয় বাউন্ডারির বাইরে।
বাধ্য হয়ে ৪ ওভারের মাঝেই ৪র্থ বোলার নিয়ে আসেন শ্রেয়াস। তার হাত ধরে আসে প্রথম সাফল্য। স্টয়নিসের বলে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কুইন্টন ডি কক। কিন্তু তাতেও দমেন নি রোহিত শর্মা। সূর্যকুমারকে নিয়ে সচল রাখেন রানের চাকা।
দিল্লির অনভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মারকাটারি ব্যাটিংয়ে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন মুম্বাই অধিনায়ক। আর গ্যালারিতে বসে তার ব্যাটিং উপভোগ করেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি। দিল্লির বোলাররা প্রভাব ফেলতে না পারলেও, নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে উইকেট বিলিয়ে দেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। রান আউট হন সূর্যকুমার যাদভ।
কেপিটেলসকে ধুয়ে সে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন রোহিত। তুলে নেন ফিফটি। এরপরেও থামেন নি তিনি। তার ব্যাটে লণ্ডভন্ড হয়ে যায় দিল্লি ক্যাপিটেলস। সঙ্গে ইষান কিষাণের দৃঢ়তায় সহজ জয়ের পথে হাঁটতে থাকে মুম্বাই।
কিন্তু, দুর্দশা পিছু ছাড়েনি রোহিতের। নর্টজের বাউন্সার উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন ললিতের হাতে। খুশির বদলে মনটা আরো খারাপ হয়ে যায় দিল্লির। ক্রিজে এসেই যে হাত খুলে মারতে থাকেন কাইরন পোলার্ড।
তবে, হারের আগে হারতে রাজি নয় দিল্লির বোলাররা। রাবাদার শিকারে পরিণত হন পোলার্ড। এসেই ফিরে যান পান্ডিয়াও। কিন্তু অন্য পাশে দৃঢ়তার পরিচয় দেন ইষান কিষান। দলকে এনে দেন পঞ্চম শিরোপা।