রাঙা প্রভাত ডেস্ক : মোংলা সমুদ্রবন্দরে বার্ষিক এক লাখ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা রয়েছে। তবে প্রতি বছর সক্ষমতার অর্ধেকই অব্যবহৃত থাকে। কিন্তু পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের বাণিজ্যিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে দ্রুতগতিতে মোংলা সমুদ্রবন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের কাজ চলছে। আর তার অংশ হিসেবে বন্দর কর্তৃপক্ষ ১ লাখ (২০ ফুটের কনটেইনার) একক সক্ষমতাসম্পন্ন কনটেইনার ইয়ার্ডকে সম্প্রসারণ করে ৪ লাখে নিয়ে যেতে কাজ শুরু করেছে। ফলে মোংলা বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়ার সংখ্যাও বহুগুণ বাড়বে বন্দর কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। মোংলা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মোংলা সমুদ্রবন্দরে বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৬ হাজার ৯৫২ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪২ হাজার ৯৮৯ একক এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৭ হাজার ৭৩৫ এককে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আর প্রতি বছর কনটেইনারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে সাইফ পাওয়ার পোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে এক লাখ একক ক্ষমতাসম্পন্ন কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। কিন্তু বিগত ২০১৯ সালে জুলাইয়ে শুরু করে প্রায় ১৫ শতাংশ কাজ হওয়ার পর করোনার থাবায় নির্মাণকাজ থমকে যায়। তবে বর্তমানে কনটেইনার ইয়ার্ড সম্প্রসারণের কাজ পুরোদমে চলছে। গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৩১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুনে ইয়ার্ডটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে। তাছাড়া বন্দরের নিজস্ব উদ্যোগে আরো দুই লাখ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে। এসব কাজ শেষ হলে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং, শ্রমিকসহ বন্দরের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে, যা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সূত্র জানায়, একসময় মোংলা বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা ছিল খুবই কম। আর বন্দরে জাহাজও কম আসতো। ফলে বন্দর ব্যবহারকারী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং, শিপিং এজেন্ট ও শ্রমিকদের অলস সময় কাটাতে হতো। কিন্তু এখন বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আর কনটেইনার ইয়ার্ডের সক্ষমতা ৪ লাখ এককে পৌঁছালে মোংলা বন্দরের কর্মচাঞ্চল্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে সার্বিক বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান জানান, বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিদিনই বন্দরের উন্নয়নে কাজ করছে। বিগত বছরগুলোর থেকে এ বছর বন্দরে অনেক বেশি জাহাজ এসেছে। কনটেইনার হ্যান্ডলিংও বেশি হয়েছে। পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ হলে মোংলা বন্দরের সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের বেশকিছু বাণিজ্যিক অঞ্চলের সাপ্লাই চেইন মজবুত হবে। ফলে বন্দরে আরো বেশি জাহাজ আসবে। সেদিক বিবেচনা করে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের কাজ করা হচ্ছে। আর তার অংশ হিসেবে কনটেইনার ইয়ার্ডকে এক লাখ একক ক্ষমতাসম্পন্ন থেকে চার লাখে নিতে কাজ শুরু হয়েছে। তাছাড়া বন্দরের জাহাজ আসার জন্য চ্যানেলের গভীরতা বৃদ্ধির জন্যও কাজ চলছে।

Share.
Exit mobile version