বিশেষ প্রতিবেদক।। বগুড়ায় এবার নবান্নে বসেছে মাছের মেলা। আর এই মাছের মেলাকে ঘিরে জেলার দুই উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ জামাই মেয়ে ও আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ করেছে। নতুন চালের পোলাও পায়েশ, আর মাছের মেলা থেকে জামাই এর মাছ দিয়ে চলছে ভুড়িভোজ। মেলায় ৩০ কেজির বাঘাআইড় থেকে ১০ কেজির কাতল মাছ উঠেছিল।

মঙ্গলবার দুটি উপজেলার মানুষ মাছ মেলা ও মেয়ে জামাই নিয়ে করেছে দিনব্যাপী উৎসব।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় সুন্দর করে সাজানো সিলভার কার্প, কাতলা, চিতল, রুই, ব্লাডকার্প, বিগহেড, বাঘা আইড়, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। সারি সারি দোকান। সেখানে থরে থরে সাজানো চলছে হাকডাক, দরদাম।

এক কেজি থেকে শুরু করে ১৭ কেজি ওজনের মাছ আছে। লোকজনও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন এসব মাছ। আবার দেখতে এসেছেন অনেকেই।

জানা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের পঞ্জিকা অনুসারে মঙ্গলবার অগ্রহায়ণের এইদিনে নবান্ন উৎসব পালন করে।

জেলার শিবগঞ্জ ও নন্দীগ্রাম উপজেলায় এদিনে বসে মাছের মেলা। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর, রণবাঘায় এবং শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে নবান্ন উপলক্ষে বসে মাছের মেলা।

জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার উপজেলার নাগরকান্দি, হাটকড়ই, ধুন্দার ও নন্দীগ্রামে মাছের মেলা বসেছে। মাছের মেলাকে ঘিরে আশপাশের ১৫ থেকে ১৬টি গ্রামে উৎসব লেগেছে। মাছ মেলায় অনেক জেলে, মাছ খামারি, মাছ ব্যবসায়ি তাদের মাছ নিয়ে এসেছেন।

উপজেলাজুড়ে প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়। ১৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিগহেড ও সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে। চিতল মাছ ওজনভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা মতিয়ার হোসেন বলেন, মেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় শতাধিক মাছের দোকান বসেছে। প্রত্যেক বিক্রেতা অন্তত ১০ থেকে ২০ মণ করে মাছ বিক্রি করেছেন।

 মেলায় প্রায় শতাধিক দোকানে রুই, কাতলা, মৃগেল, ব্রিগেড, গ্রাস কাপ, সিলভার, চিতল, বাঘার, বোয়াল, ব্লাডকার্প, ইলিশ, কার্পিও মাছ বিক্রি হচ্ছে।

এসব মাছ রাজশাহী, জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এনেছেন পাইকাররা। একদিনের এই মেলায় বিল ও নদীর মাছের পাশাপাশি স্থানীয় পুকুরে চাষকৃত মাছও বিক্রি হয়। বছর জুড়ে বড় প্রজাতির মাছ এই মেলায় তুলে বিক্রি করেন মাছ চাষিরা। ওজন তারতম্য প্রতিটি মাছ ৩ থেকে ২১ কেজি পর্যন্ত। ২১ কেজি ওজনের সবচেয়ে বড় ব্লাডকার্প মাছটি দাম হয়েছে ৭৫০ টাকা কেজি। এছাড়া ১০ কেজি ওজনের কাতল, একটি বাঘাইড় মাছ উঠেছিল ৩০ কেজি। সকালেই সেটি বিক্রি হয়ে যায়। ১২ কেজি ওজনের সিলভার কাপ মাছও উঠেছে দুটি উপজেলার মাছ মেলায়। মেলায় আকারভেদে রুইসহ অন্যান্য মাছ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১০০০ টাকায়।

Share.
Exit mobile version