রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে গোটা এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। এতে করে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ অফিসারসহ ২০/২৫ জন আহত হন।
রবিবার দুপুর হতে বিকাল পর্যন্ত আড়াইহাজার পৌরসভার ঝাউগড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ প্রহরায় ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ৩/৪ হাজার অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন করে তিতাস কর্তৃপক্ষ। সংঘর্ষের পর ঢাকা- বিশনন্দী ফেরিঘাট সড়ক যানচলাচল বন্ধ হয়ে যা। এতে করে মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
জানা যায়, আড়াইহাজার পৌরসভার ঝাউগড়া এলাকায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কয়েক হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেয় লোকজন। এতে করে স্থানীয় কিছু অসাধু লোকজন আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে। কিন্তু সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। গত কয়েকদিন আগে তিতাস কর্তৃপক্ষ ঝাউগড়া এলাকায় কয়েকশ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও ফের সংযোগ দিয়ে গ্যাস ব্যবহার করে আসছিল।
রবিবার দুপুরে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে তিতাস অফিসের লোকজন অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন শুরু করে। প্রায় ৫/৬’শ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েও যায়। এসময় শত শত নারী পুরুষ একত্রিত হয়ে অভিযানের টিমের উপর হামলা চালায়।
এসময় পুলিশ এলাকার লোকদের ধাওয়া দিলে বেপরোয়া হয়ে উঠে লোকজন। পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট ও তিতাস অফিসের লোকদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে তারা। তারপর শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। একপর্যায়ে ঝাউগড়া বাজার এলাকায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়ে উঠে।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের এসআই সফিকুল ইসলামসহ ২০ জন আহত হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৮৭ রাউন্ড রাবার বুলেট, ১৩টি কাদুনি গ্যাস ছুড়ে। পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করে।
তিতাস অফিসের সোনারগাঁ জোনের ডেপুটি ম্যানাজার রিফাত আব্দুল্লাহ জানান, আড়াইহাজার উপজেলার ঝাউগড়া এলাকায় কয়েক হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। আমরা অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে আমাদের টিমের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আড়াইহাজার থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শওকত হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৮৭ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ১৩টি কাদুনি গ্যাস ছোড়া হয়।
আড়াইহাজার উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহাগ হোসেন জানান, উপজেলার ঝাউগড়া এলাকায় ১৪ টি স্পটে কয়েক হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও ফের সংযোগ নিয়ে গ্যাস ব্যবহার করছে।