নিজস্ব প্রতিবেদক :- একটি অনলাই পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চাকরি দেয়ার নামে আবেদনকারীদের সাথে প্রতারণা করেছে মা ও শিশু কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র নামক একটি বেসরকারী সংগঠন। শুধু তাই নয় আবেদনকারীদের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে সংগঠনটি প্রতারক চক্রের সদস্যরা। প্রতারণার শিকার হয়েছেন আবেদনকারী বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম এর স্ত্রী এ্যানি আক্তার, একই এলাকার মৃত হাকিম বেপারির ছেলে মোঃ মাইনুর ইসলাম, মহিউদ্দিন চৌকিদারের স্ত্রী সুমি আক্তার ও কুদ্দুস হাওলাদারের ছেলে সাইবুল হক তানভীর হাওলাদার।
প্রতারণার শিকার এ্যানি আক্তার জানায়, গত কয়েকদিন পূর্বে একটি অনলাইন চাকরীর খবর (পযধশৎরশযড়নড়ৎ.পড়স ) নামক পত্রিকায় মা ও শিশু কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীনে বরিশাল জেলা সহ দেশের বিভিন্ন জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা পর্যায় ৭ টি পদের জন্য লোক নিয়োগ করা হবে। সে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী “ইউনিয়ন সুপারভাইজার” পদের জন্য পরিচালক প্রশাসন, মা ও শিশু কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র (গভঃরেজিঃনং সি ২০২১৩৪১) বাড়ী নং ৫১২, রোড নং ২, মোহাম্মদপুর ঢাকা-১২০৭ বরাবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ই-মেইল এর মাধ্যমে একটি আবেদন সর্বপ্রথম দাখিল করে। তার (এ্যানি আক্তার) এর দেখাদেখী একই বাড়ীর আরো তিন জন আবেদনকারী বিভিন্ন পদের জন্য আবেদন করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
২৮ নভেম্বর মা ও শিশু কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র অফিস থেকে ০১৮৪২০৭৪৭৭৬ নম্বরে এক মহিলা আবেদনকারীদের নিকট ফোন করে জানায়, আপনাদের নিয়োগ চুড়ান্ত হয়েছে। আপনাদের বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে একটি বিদ্যালয়ে ৫ই নভেম্বর থেকে পনেরো দিন আপনাদের প্রশিক্ষণ হবে। ওই প্রশিক্ষণের জন্য ৭৫০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ফেরত যোগ্য অফিসে জমা দিতে হবে। প্রশিক্ষণ শেষে ওই টাকাসহ আরো ৪০০০ টাকা ভাতা দেওয়া হবে। পরে তাদের কথা মতো ০১৭৭৫৮৮৬৬৩২ অফিসের পার্সোনাল বিকাশ নম্বরে আবেদনকারীরা প্রত্যেকে ৭৫০ টাকা করে পাঠায়। বিকাশে টাকা পাঠানোর পর মা ও শিশু কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালকের স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্রসহ ৭৫০ টাকা প্রাপ্তির রশিদ রাজধানীর কল্যাণপুর সুন্দারবন কুরিয়ার সার্ভিস শাখা থেকে সুন্দারবন কুরিয়ার সার্ভিস বরিশাল শাখা অফিসে পাঠানো হয়। আবেদনকারীরা নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে ৩০ নভেম্বর থেকে ০৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ০১৪০২৭৪২৭১১, ০১৮৪২০৭৪৭৫৬, ০১৮৪২০৭৪৭৭৬, ০১৮২৫৪৬৯৫৮৩ ও ০১৮৮৮০০৯৬৮৯ নাম্বার থেকে ফোন করে ফেরত যোগ্য জামানতবাবদ ১১৫০০ টাকা ও আবেদনকারীদের পছন্দনুযায়ী ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য যৌথ ব্যাংক একাউন্ট ফি বাবদ ০৩ ডিসেম্বর ৫৫০ টাকা করে মোট ৫১২০০ টাকা চারজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে সংগঠনটির প্রতারকরা।
৪ই ডিসেম্বর বিকালে প্রশিক্ষণের স্থান রাতে জানিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও আবেদনকারীরা তাদের সকল ফোন নাম্বার বন্ধ পায়। পরবর্তীতে ০৬ ডিসেম্বর ০১৮৪২০৭৪৭৭৬ নাম্বারে আবেদনকারীরা ফোন দিলে তাদের সাথে খারাপ আচারন করে প্রতারকচক্রটির এক মহিলা সদস্য যা অডিও ধারন করে রেখেছে আবেদন কারীরা। স্থানীয় এক মিডিয়া কর্মী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রনিকে আবেদনকারীরা এ বিষয়ে জানালে খোলাকৃত মোবাইল নাম্বারে ফোনকরলে অফিসের ঠিকানা জানতে চাইলে, মোহাম্মদপুুর আদাবর রোড নং২ এর কথা উল্লেখ করে ফোন কেটে দেয় এক মহিলা প্রতারক। আবেদনকারী মোঃ মাইনুর ইসলাম বলেন, বিকাশ নাম্বারসহ তাদের ছয়টি নাম্বার বন্ধ থাকলেও শেষে ৭৬ ফোন নাম্বারটি আমরা খোলা পেয়েছি। চাকরীর কথা ও টাকা ফেরতের কথা বললে, আমাদের সাথে মহিলাটি রশিকতা করে এবং তিনি (মহিলা) বলেনযে, তারা চাকরী দিবেন না, তারা নাকি মর্ডাম-শো করার জন্য টাকা নিয়েছেন। আরেক আবেদনকারী সুমি আক্তার বলেন, আমার ফোন নাম্বার বেল্যাক লিস্টে ফেলে রেখেছে। এব্যাপারে প্রসাশনের সহায়তা চেয়ে আবেদনকারী সাইবুল হক তানভীর বলেন, চাকুরীর নাম দিয়ে এসব সংগঠন গরিব মেধাবী যুবকদের সাথে প্রতারণা করছে। এছাড়াও যানাযায় পাসের এলাকার সুরমা ও মুন্নি আক্তার নামের দুইজন মহিলা আবেদন করলে তাদের কাছেও ওই প্রতারক সংগঠনটি চাকরী দেয়ার নাম করে টাকা চেয়েছে কিন্তু তারা পাসের এলাকায় একই সংগঠনের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছে এই বিষটি জানতে পেরে ওই দুই আবেনকারী টাকা জমা দেয়নি। প্রতারণার শিকার হওয়া সকল আবেদনকারীরা উক্ত প্রতারক সংগঠনটির প্রতারকদের দ্বারা দেশের সাধারন জনগন যাতে প্রতারিত না হয় সে বিষয়টি আমলে আনার জন্য প্রশাসান ও প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করেন।