রফিকুল ইসলাম রনি :- আজ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৪৯ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। আগামি প্রজন্মের জন্য মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিতে ১৯৭১ সালে জাতির যে সব বীর বাঙালি সন্তান তাদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আজকের এই দিনে (১৪ ডিসেম্বর) তিনি দেশ মাতার মুক্তির জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন এবং শহীদ হন তিনি।

৯ মাসব্যাপী যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে ঠিক তখনই ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের রক্তে লাল হয়ে যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাটি। আর তাই এই মহানায়কের ইচ্ছানুযায়ী তাকে দাফন করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ চত্বর।

১৯৪৯ সালের ৭ মার্চ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের বর্তমান নাম জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের রহিমগঞ্জ গ্রামের এক মুসলিম সমভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর।

১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের করকোরাম এলাকায় ১৭৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নে ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগ দেন তিনি। একই বছরের ৩ জুলাই শিয়ালকোর্টের সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসে যোগ দেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে লে. কর্নেল নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ৭ নং সেক্টরের মোহদিপুর সাব সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। বীরশ্রেষ্ঠ এই সন্তানের শেষ অভিযান ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের বারঘরিয়ায়। ১২ ডিসেম্বর শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে অবস্থান নেন মহানন্দা নদীর ওপারে বারঘরিয়ায়। ১৩ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মাহানন্দা নদী পাড় হয়ে সম্মুখ যুদ্ধে একের পর এক পরাস্থ করেন শত্রু বাহীনিকে।

১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর সকালে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে তিনি শুরু করেন যুদ্ধ। একটি একটি করে ট্রেজ দখল করে এগিয়ে যেতে থাকেন বিজয়ের পথে। যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন হানাদার বাহিনীদের। যুদ্ধের প্রায় শেষ প্রান্তে শত্রুর একটি বুলেট তার কপালে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন তিনি।

Share.
Exit mobile version