রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ  আজ খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে উৎসবের আনন্দধারা। বহুবর্ণ আলোকের রোশনাইয়ে ভেসে যাচ্ছে গির্জা, গৃহ-দুয়ার। শোভা পাচ্ছে সান্তাক্রুজের ছবি। বাজারে ফুলকপি, মুলা, কমলালেবু, নতুন গুড় আর কানঢাকা সান্তাক্রুজ টুপি মনে করিয়ে দিচ্ছে, যতই করোনা থাকুক আবার এসে গেল শুভ বড়দিন। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অভিজাত হোটেলগুলোতে সীমিত আকারে আয়োজন রাখা হয়েছে ‘ক্রিসমাস ট্রি’সহ খাবার-দাবারসহ নানা অনুষঙ্গ। কোথাও কোথাও সাজানো হয়েছে গো-শালা। ‘পাপীকে নয়, ঘৃণা করো পাপকে, আর ঘৃণা নয়, ভালোবাসো’ এই ‘সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতিময়’ আহ্বান নিয়ে মানুষের মনের রাজা যিশুখ্রিষ্ট এদিন আসেন পৃথিবীতে। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ঈশ্বরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একজন নারীর প্রয়োজন ছিল। সেই নারীই কুমারী মেরি, মুসলমানদের কাছে যিনি পরিচিত বিবি মরিয়ম হিসেবে। ধর্মবিশ্বাস বলে, ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও অলৌকিক ক্ষমতায় মেরি কুমারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী হন। ঈশ্বরের দূতের কথামতো শিশুটির নাম রাখা হয় যিশাস, যা বাংলায় ‘যিশু’। আজ থেকে ২ হাজার ১৫ বছর আগে জেরুজালেমের বেথলেহেম শহরের এক গো-শালায় জন্ম হয় যিশুর। যিশু নামের সেই শিশুটিই বড় হয়ে পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শোনালেন। তিনি বললেন, ‘ঘৃণা নয়, ভালোবাসো। ভালোবাসো সবাইকে, ভালোবাসো তোমার প্রতিবেশীকে, এমনকি তোমার শত্রুকেও। মানুষকে ক্ষমা করো, তাহলে তুমিও ক্ষমা পাবে। পাপিকে নয়, ঘৃণা করো পাপকে। গরিব-দুঃখীকে সাধ্যমতো সাহায্য করো, ঈশ্বরকে ভয় করো।

গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জায় বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এসময় গির্জার ভেতরে রঙিন কাগজ, ফুল ও আলো দিয়ে সাজানো হয়। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি।

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালন করছে তাদের সবচেয়ে এই বড় উত্সব। আজ প্রভাতে গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা (খ্রিষ্টযোগ) হবে। সব বাড়িতেই থাকবে কেক, পিঠা, কমলালেবু, পোলাও-বিরিয়ানিসহ বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ও উন্নত খাবারদাবারের আয়োজন। আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন, বেসরকারি টিভি ও রেডিও দিবসটির তাত্পর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। এদিকে করোনার বিস্তার রোধে এবারে বিশ্বের খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ বহু দেশে জমকালো আয়োজন নেই।

দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সম্প্রদায় নেতা পৃথক বাণীতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।

Share.
Exit mobile version