রফিকুল ইসলাম রনি :- প্রতিষ্ঠার ১২ বছরেও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর পূর্ণতা পায়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের জন্মস্থান বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীর নগরে তার স্মৃতি রক্ষায় ২০০৮ সালে সরকারীভাবে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের দান করা ২০ শতক জমিতে স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছিলো। এখানে বিভিন্ন সময়ে তার পরিবারকে দেয়া সরকারি বেসরকারী পদকের পাশাপাশি মুক্তিযুুদ্ধসহ নানা বিষয়ের বই, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নানা পোস্টার, সাময়িকী ও পত্রপত্রিকা সংরক্ষিত রয়েছে। বই স্বল্পতাসহ নানা সংস্কটে স্মৃতি কমপ্লেক্সটি আজো পূর্ণাঙ্গতা পায়নি। কোন উন্নয়ন ঘটেনি বীরশ্রেষ্ঠের জন্মভূমি গ্রামেও।

বীরশ্রেষ্ঠের ভাই মোঃ মঞ্জুর রহমান বাচ্চু জানান, স্মৃতি জাদুঘরে যদি কিছু না থাকে তাহলে জাদুঘর নামে মাত্র। মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর যেসব স্থানে যুদ্ধ করেছেন, সেসব স্থানের ছবি স্থাপন করার জন্য অনুরোধ করেও আজ পর্যন্ত সাড়া পাওয়া যায়নি। ওই সব বিষয় থাকলে মানুষ তার অবদানের কথা এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারত। এছাড়াও তিনি বলেন, তার মায়ের আশা ছিলো বীরশ্রেষ্ঠের নামে একটি হাসপাতাল থাকুক রহিমগঞ্জ গ্রামে।

গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর দেখতে আসা দর্শনার্থী আগরপুর ডিগ্রি কলেজের মাইনুর ইসলাম জানান,একজন বীরশ্রেষ্ঠের নামে স্মৃতি জাদুঘর এত কম পরিসরে হতে পারে না। জাদুঘরটি আরো সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান,জাদুঘরে অনেক কিছুর আজো অভাব রয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানীকে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে হলে জাদুঘরটি আরো উন্নত করতে হবে। তার পরিবার এ প্রতিষ্ঠানটি আরো আধুনিকায়নের পাশাপাশি সরকারি ভাবে এখানে বরিশ্রেষ্ঠের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকীসহ জাতীয় দিবস গুলো পালনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে।

বীরশ্রেষ্ঠের ভাইয়ের ছেলে মোঃ সাব্বির হোসেন জানান, এই প্রতিষ্ঠানটি করার পর এলাকায় শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রসার ঘটেছে। এখানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আরো বিভিন্ন রকম কার্যক্রম পরিচালনা করলে এলাকার ছাত্র-ছাত্রী এবং নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আরো বেশী করে জানতে ও শিখতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে পারবে।
ওই গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের লাইব্রেয়িয়ান হারুন অর রুশদ বলেন, লাইব্রেরি হিসেবে কিছু বই সংরক্ষিত আছে, স্মৃতী ও জাদুঘর হিসেবে মৃক্তিযোদ্ধা সম্বলিত কোন স্মৃতী এখানে নাই। এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি কমপ্লেক্সকে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলার দাবী জানিয়েছে।

Share.
Exit mobile version