আজ টোল প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক
রাঙাপ্রভাত ডেস্কঃ  দেশের সড়ক-মহাসড়কে নির্মিত সেতু থেকে টোল আদায়ের রীতি রয়েছে। এবার জাতীয় মহাসড়ক ব্যবহারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো দেশেও টোল ধার্য করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে টোল আদায়ের জন্য ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েকে বেছে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। আজ রবিবার এ নিয়ে অংশীজন সভা করার কথা রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের।

যেসব মহাসড়ক চার লেনে এবং এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত হয়েছে সেগুলো থেকে কীভাবে টোল আদায় করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে সওজ। ইতোমধ্যে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের খসড়া টোল হার নির্ধারণ করেছে এ সংক্রান্ত কমিটি। ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে ধীরগতির বাহনের জন্য লেন সুবিধা চালুর পর মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন থেকে টোল নেওয়া হতে পারে। নির্মাণাধীন জয়দেবপুর-চন্দ্রা-এলেঙ্গা (সাসেক-১) এবং এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর (সাসেক-২) মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত হওয়ার পর সেখানেও টোল আদায় করা হবে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়কের টোল প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে। সেখানে স্টেকহোল্ডাররা থাকবেন। পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, রবিবারের (আজ) বৈঠকে টোল বিষয়ে প্রস্তাব শোনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ ও মন্তব্য করা হবে।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) নির্মাণাধীন প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত ছয় লেনের ঢাকা বাইপাস এবং রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়কেও টোল দিতে হবে। ইতোমধ্যে ঢাকা বাইপাসের টোলের হার অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ঢাকা বাইপাসের ওপর ভিত্তি করে মহাসড়কে টোল হার নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় করবে সরকার। টোল হার নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে চারটি এন্ট্রি এবং চারটি এক্সিট পয়েন্ট স্থাপনের সুপারিশ করেছে।

ঢাকা থেকে মাওয়ামুখী যানবাহন রাজধানীর দোলাইরপাড় দিয়ে প্রবেশ করে চারটি স্থানে টোল দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বেরিয়ে যেতে পারবে। এগুলো হলো- আবদুল্লাহপুর, ধলেশ্বরী, মালিগ্রাম এবং আড়িয়াল খাঁ। ঢাকামুখী গাড়ি ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ থেকে প্রবেশ করে আড়িয়াল খাঁ, শ্রীনগর, ধলেশ্বরী এবং আবদুল্লাহপুরে টোল দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বেরিয়ে যেতে পারবে। এসব এক্সিট পয়েন্ট দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি প্রবেশেরও সুযোগ থাকবে। কোনো যানবাহনকে একাধিকবার টোল দিতে হবে না। এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরুর পর পোস্তগোলা সেতু, ধলেশ্বরী সেতুতে আর টোল দিতে হবে না। একটি গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ের এন্ট্রি পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশ করে এক্সিট পয়েন্ট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার মাঝে যত কিলোমিটার পথ চলবে- ঠিক ততটুকুর টোল দিতে হবে। ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুই পাশে ধীরগতির লেনসহ ছয় লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণবঙ্গকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করবে।

সওজের তথ্য মতে, ঢাকার পোস্তগোলা সেতু থেকে মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী যেতে একটি ট্রাককে ২ হাজার ৫২৮ টাকা এবং বড় বাসকে (৩১ আসনের বেশি) ১ হাজার ১৩৮ টাকা টোল দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এটি হলো টোল নীতিমালা ২০১৪-এর ‘ভিত্তি হার’ ধরলে। এ হার অত্যধিক হওয়ায় এখন কিলোমিটার হিসাবে টোল ধরার খসড়া প্রস্তাব হয়েছে। ফলে পোস্তগোলা থেকে ধলেশ্বরী পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পথ যেতে ট্রাকে ২৯২ টাকা টোল দিতে হবে। এতে কিলোমিটারে ২৬ টাকা ৫০ পয়সা টোল দিতে হবে। বড় বাসে টোল দিতে হবে ১৩৬ টাকা। প্রতি কিলোমিটার হিসাবে যা ১২ টাকা ৪০ পয়সা। আর রাজধানীর দোলাইরপাড় থেকে ফরিদপুরের ভাঙা ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেইলারকে টোল দিতে হবে ১ হাজার ৮২০ টাকা। এই পুরো পথের জন্য ট্রাকের ক্ষেত্রে ১ হাজার ৪৫৭ টাকা ৫০ পয়সা আর বড় বাসের ক্ষেত্রে গুণতে হবে ৬৮২ টাকা। এই এক্সপ্রেসওয়েতে পাঁচটি ফ্লাইওভার রয়েছে। ফ্লাইওভার ব্যবহারের জন্য বাড়তি ফি ধরলে টোল আরও বাড়বে। মাঝে পদ্মা সেতু ব্যবহারের জন্য আলাদাভাবে টোল দিতে হবে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাসড়কে টোলের ব্যবস্থা রাখার কথা বলেন। এভাবে প্রাপ্ত টাকার জন্য একটি ব্যাংক হিসাব খোলারও নির্দেশনা দেন তিনি। এ টাকা দিয়ে মহাসড়কগুলো সংস্কার করা যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর টোলের হার নির্ধারণে কমিটি করে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

You www.vevioz.com need to enter the mindset of this reader.

Share.
Exit mobile version