রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ-করোনার মহামারীতে বিভিন্ন পেশার মানুষ করোনা হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে কাজ করেছেন এবং বর্তমানেও করছেন। তাদের মধ্যে সম্মুখ যোদ্ধা হলেন বাংলাদেশ পুলিশ। তারা নিজেদের জীবন বাজী রেখে লকডাউন চলাকালীন সময়ে কাজ করেছেন। সারাদেশের মতো বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনা মো. শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার) এর নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় কাজ করেছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রন্ত হয়েছেন মেট্রো পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্যরা। তাদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য আনোয়ার হোসেন। তিনি কাউনিয়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক। করোনা মহামারীতে তিনি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সম্প্রতি এই পুলিশ কর্মকর্তার একটি স্ট্যাটার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। স্ট্যাটাসটি হবহু তুলে ধরা হলোঃ- মহামারী করোনা যোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা প্রদানের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্বেও বাস্তবে মহামারী করোনা যোদ্ধাদের সাথে করা হচ্ছে নিষ্ঠুর এবং অমানবিক আচরন যাহা দেখার কেউ নাই !!
বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের ১০০% মানবিক হওয়া বাধ্যতামুলক অপরদিকে পুলিশ সদস্যদের প্রতি ১০০% অমানবিক আচরন করাও যেনো প্রতিযোগীতামুলক !! -ঃঅপেশাদার পুলিশ অফিসার হিসাবে আকুতিঃ-মাননীয় পুলিশ কমিশনার বরিশাল স্যারের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করিয়াছিলাম যে, স্যার গতো দশ বারো বছর পর্যন্ত কোল্ড এলার্জিতে ভুগিতেছি। প্রতি বছর শীতের তিন/চার মাস পর্যন্ত নিয়মিত কোল্ড এ্যালার্জির ঔষধ খেতে হয়। আমার হার্টের একটা ফুল ব্লক আর একটি আংশিক ব্লক নিয়ে বেঁচে আছি। আমি আট/নয় বছর যাবত উচ্চ রক্তচাপেও ভুগিতেছি। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সুদুর চট্রগ্রাম বিভাগে চাকুরী করতে গেলে আমার বাঁচার সুযোগ কম। স্যার আমি কোন প্রকার অপরাধ করি না। আমি কারো একটা চা পর্যন্ত খাই না। আমাকে পুলিশ লাইন কিংবা কন্ট্রোল রুমে বদলী করলেও আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো। আমি আর মাত্র চারটা বছর চাকুরী করে অবসরে চলে যাবো। স্যার কাউনিয়া থানার দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসাবে মানবতার সেবা করতে গিয়ে ডিউটিরত অবস্থায় মে/২০ মাসে আমি মহামারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। আমার হার্টে সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপের কারনে করোনায় খুব কস্ট পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম মৃত্যুর পূর্বক্ষন পর্যন্ত মানব সেবায় নিজেকে উৎস্বর্গ করবো ইনশাআল্লাহ। করোনার পরে চোখে খুবই কম দেখিতে পাই এবং হার্টের সমস্যাও অনেক বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। আমার চাকুরী ২১ বছর চলমান, আমার বড় ছেলে বরিশাল জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আর ছোট ছেলেও বরিশাল জিলা স্কুলের তৃতীয় শ্রেনীর ভর্তি পরিক্ষায় ২০২১ সালে উত্তীর্ণ হইয়াছে। আপনি বরিশাল মেট্রোর মানবিক পুলিশ কমিশনার হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করিয়াছেন। সো আমার প্রতি কিংবা আপনার পুলিশ পরিবারের এক অসহায় সদস্যের প্রতি একটু মানবিক আচরণ করার যদি কোন সুযোগ না থাকে তাহলে আমাকে আমার প্রাপ্য ইনভেলেইট পেনশনের সুযোগ প্রদানের জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। আপনার আশ্রয় কামনা করিতেছি স্যার। আমি বড়ই নিরুপায় স্যার !! সম্প্রতি মাননীয় পুলিশ কমিশনার স্যারের ডায়লগ একটি শান্তি স্থাপন করা মানে একটি মসজিদ স্থাপন করার সমান সংবাদের শিরোনাম দেখে অনেক বড় আশা করে মাননীয় পুলিশ কমিশনার স্যারের কাছে সাহায্য/সহযোগিতার আবেদন করে আমি যেন ডাকাতি করার অপরাধের মতো ভৎসনা পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে এসেছিলাম!! মানবিকতাকে স্পর্শ করা তো অনেক দুরের কথা বদলী বাতিলের আবেদন উপস্থাপন করতে গিয়ে চরম অমানবিকতার অপরাধে ভূষিত হয়েছি !! অভিমত প্রকাশ করার কারনে না জানি কি দূর্গতি অপেক্ষমান !! সত্য কথা বলাও এখন বড় ধরনের অপরাধ। মিথ্যা/চাপাবাজির যুগে সত্য কথা বললে খুব সহজে ব্লাক মেইলিং করার অপরাধে অপরাধী কিংবা কখনো কখনো পাগোলের উপাধিতে ভূষিত হতে হয় !! (স্যার অত্যান্ত ভালো মানুষ, আমার মনে হয় স্যারকে ভুল বুঝানো হইয়াছে) !! মানবিকতার দেখা না পেয়ে নিজেকে যেভাবে শান্তনা দিলাম ছোট বেলার সেই গল্পটাকে মনে করে—-ঈশ্বর থাকেন ঐ গ্রামের ভদ্র পল্লীতে, তাঁহাকে এখানে খুঁজে পাওয়া যাবে না !!