রাঙা প্রভাত ডেস্ক ।। কক্সবাজারে বাড়িতে ঢুকে নারীকে মারধর করে তিন লাখ টাকা লুটের অভিযোগে পুলিশের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলার পাশাপাশি অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (১ মার্চ) রাতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্তদের মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকেলে আদালতে হাজির হয়। পরে আদালতের বিচারক তাদের তিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় দুজনকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন এসপি। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের তিন সদস্যরা হলেন- উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুর-ই খোদা ছিদ্দিকী, কনস্টেবল আমিনুল মমিন ও মামুন মোল্লা। তারা তিনজনই কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, কক্সবাজার শহরের মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার রিয়াজ আহমদ নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রী রোজিনা খাতুনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা লুটের চেষ্টা করেন স্থানীয় দুই ব্যক্তির সহযোগিতায় সাদা পোশাকে থাকা পুলিশের তিন সদস্য। টাকা নিয়ে চারজন চলে যাওয়ার সময় রোজিনা একজনকে জাপটে ধরেন। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ওই পুলিশ সদস্যকে আটক করে। পরে পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন করে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।
এসপি আরও জানান, বিষয়টি জানার পর পরই দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আটককৃত পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে অপর সহযোগীদের নাম জেনে তাদের থানায় ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলার পাশাপাশি তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। বিধানমতে তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

রোজিনার স্বামী রিয়াজ আহমেদ জানান, কক্সবাজারের সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গ্যাসের দোকান করতে আমার স্ত্রী তিন লাখ টাকা তার আত্মীয়স্বজন থেকে সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরেন সোমবার বিকেলে। সন্ধ্যায় অটোরিকশায় ৪-৫ জন সাদা পোশাকে আমাদের বাড়ি আসেন। তারা আমার স্ত্রীকে ইয়াবা ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে টাকা দাবি করে। রোজিনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তারা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। মারধর থেকে রক্ষা পেতে রোজিনা তার কাছে থাকা তিন লাখ টাকা তাদের হাতে তুলে দেন। তারা টাকা নিয়ে চালে যাওয়ার সময় পেছন থেকে একজনকে ঝাপটে ধরে চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। তাদের সহযোগিতায় ওই একজনকে ধরে ৯৯৯-এ পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যান এবং পরে জেনেছি বাড়িতে আসা লোকজনের মাঝে তিনজন পুলিশ ও বাকি দুইজন স্থানীয়। আমার স্ত্রীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তবে, স্থানীয় একটি সূত্র দাবি করেছে, রোজিনার পরিবার মাদক কারবারে জড়িত। রোজিনা খাতুনের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসাসহ নানা অভিযোগ আছে। এসবের মামলায় গ্রেফতারও হয়েছেন বেশ কয়েকবার।

Share.
Exit mobile version