লাইফস্টাইল ডেস্ক।।মধুতে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। ত্বকের যত্নে ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা সারাতে মধু খুব ভালো কাজ করে। মধুতে প্রায় ৪৫টিও বেশি খাদ্য উপাদান থাকে। তবে এতে সাধারণত কোনো চর্বি বা প্রোটিন নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম মধু থেকে আমরা পাই ৩০৪ ক্যালরি।
মধু কিনতে গেলে কমবেশি সবাই বিপাকে পড়ে যান। কারণ নকল মধুতে বাজার সয়লাব। সব মধুর চেহারা একই রকম হওয়ায় বোঝা দায় কোনটি আসল, কোনটি নকল।
খাঁটি মধু চেনার উপায় জানতে হলে আপনার কিছু কৌশল জানা প্রয়োজন, খুব সহজেই চিনতে পারেন আসল মধু। তবে আসল মধু চেনার আগে চিনতে হবে নকল মধু।
খাঁটি মধুর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যেগুলো জানা থাকা জরুরি। যেমন-
১. মধুর উপরের স্তরে হালকা ফেনা হওয়া।
২. গ্যাস হওয়া।
৩. গাদ জমা।
৪. তলানীতে চিনিরমত পদার্থ জমা (যা মুলত সুক্রোজ ও গ্লুকোজ)।
৫. মধু পাতলাও হতে পারে, যেমন: বরই ফুলের মধুতে ময়েশ্চারের পরিমাণ বেশি থাকে এজন্য পাতলা হয় এবং প্রচুর গ্যাস হয়।
আসুন জেনে নিই খাঁটি মধু চেনার উপায়-
১. এক গ্লাস পানিতে এক চামচ পরিমাণ মধু দিন। তার পর আস্তে আস্তে গ্লাসটি নাড়া দিন। মধু পানির সঙ্গে মিশে গেলে নিশ্চিত হবেন সেটা ভেজাল মধু। আর মধু যদি ছোট পিণ্ডের মতো গ্লাসের পানিতে ছড়িয়ে যায়, তা হলে বুঝবেন সেটি খাঁটি মধু।
২. খাঁটি মধু ফ্রিজে রাখা হলে কখনও জমাট বাঁধবে না বা দানা দানাভাব হবে না। ঘন তরল-ভাবটাই থাকবে। তবে ভেজাল মধু ফ্রিজে রাখলে জমে যাবে এবং স্ফটিকের মতো দানাভাব দেখা দিবে। এমনকি মধুর উপরের অংশে সাদা স্তরও দেখা দেবে, যা আসলে চিনি।
৩. কাঁচা খাঁটি মধুতে সাদা ফেনা বা বুদবুদের মতো দেখা দেবে। এটা খাঁটি মধু চেনার চিহ্ন, এর থেকে বোঝা যায় এই মধুতে কোনো রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়নি।
৪. খাঁটি মধুতে ম্যাচের কাঠি ডুবিয়ে আগুন ধরালে সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে উঠবে। যদি না জ্বলে তবে বুঝতে হবে সেটা ভেজাল মধু।
৫. নকল মধু বেশ পাতলা হয়। স্তরগুলো আলাদা করা যায়। এ ছাড়া খেতে সুস্বাদু হয় না। এ ছাড়া তলানিটা খসখসে থাকে।
৬. সামান্য মধু আঙুলে নিন, এর পুরুত্ব দেখুন। আসল মধু অনেক বেশি আঠালো হবে।
৭. খাঁটি মধু ড্রপ অবস্থায়ই গ্লাসের নিচে চলে যাবে। তার পর আস্তে আস্তে গ্লাসটি নাড়া দিন। মধু পানির সঙ্গে মিশে গেলে নিশ্চিত হবেন সেটি ভেজাল মধু। আর মধু যদি ছোট পিণ্ডের মতো গ্লাসের পানিতে ছড়িয়ে যায়, তা হলে বুঝবেন সেটি খাঁটি মধু।
৮. মধু যদি নকল না হয়, তবে দীর্ঘদিন থাকলেও মধুর নিচে জমাট বাঁধবে না। এ ছাড়া পিঁপড়া ধরবে না।
৯. খাঁটি মধুতে তাপ দিলে তা খুব দ্রুত কেরামেলের মতো হয়ে যাবে। এটা ফোমের মতো ফেনিল হবে না। কিন্তু ভেজাল মধু কেরামেলের মতো ফেটে ফেটে যাবে না। এতে কেবল বুদবুদ উঠবে।
১০. সুন্দরবনের মধু ও পাহাড়ি অঞ্চলের মধুর মধ্যে পার্থক্য থাকবে। বনাঞ্চলের আর্দ্র পরিবেশের কারণে মধু পাতলা হয়। আর পাহাড়ি এলাকার শুষ্ক ও ঠাণ্ডা পরিবেশের জন্য মধু হয় ঘন। আবহাওয়া মধুর ওপর সবসময় প্রভাব রাখে। সুন্দরবন হচ্ছে ‘ম্যানগ্রোভ’ বা শ্বাসমূলীয় বন। এই বনের বেশিরভাগ গাছের মূল পানির মধ্যে থাকে, আর পরিবেশও আর্দ্র। তাই মনে রাখতে হবে খাঁটি সুন্দরবনের মধু সবসময় হবে পাতলা তরল।