শেখ হাসিনার অনন্য উচ্চতার চল্লিশ বছর
কামরুল হাসান সোহাগ:
পঁচাত্তরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরে দীর্ঘদিনের নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে টানা ৪০ বছর ধরে সফলতার সঙ্গে এ দেশের স্বাধীনতার নেতৃত্ব দানকারি উপমহাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। একইসাথে তার সুযোগ্য নেতৃত্বে চার বার বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে দলটি। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে এ দীর্ঘ সময় দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক কঠিন পথ।
বার বার কারাবরণ, জীবনের ঝুঁকি, এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া ছাড়াও নানা চড়াই-উৎরাই, ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দীর্ঘ সময়ে দেশের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের নতুন মাত্র সূচিত হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নিত হয়েছে। এর পাশাপাশি শেখ হাসিনার হাত দিয়েই বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, বাংলাদেশ পরিনত হয়েছে ডিজিটাল দেশে। শুধু বাংলাদেশই নয়, বৈশ্বিক নানা সংকট নিয়ে কথা বলা এবং মতামত দেওয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরেও শেখ হাসিনার পরিচিত বাড়ছে
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তার দল আওয়ামী লীগ। জেল-জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও প্রকট আকার ধারণ করে। দ্বিধাবিভক্ত ও ব্র্যাকেটবন্দি হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। এই পেক্ষাপটে নির্বাসিত জীবনে ভারতে অবস্থানকালে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় দলের কাউন্সিলে সর্বসন্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
শুরু হয় শেখ হাসিনার আরেক সংগ্রামী জীবন।দীর্ঘ দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে বহু বার তার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এ হামলায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের ২৩ জন নেতাকর্মী শহীদ হন।
শেখ হাসিনা নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে তার বাবা বঙ্গবন্ধুর মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী। তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। ‘রূপকল্প ২০২১’ এর মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি উন্নত, আধুনিক, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
অতিমারি করোনা সংকটের এ ক্রান্তিলগ্নেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের জীবন-জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিঃস্বার্থভাবে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। করোনা সংকটের শুরু থেকেই তিনি করোনা প্রতিরোধের পাশাপাশি জনগণের জীবন-জীবিকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন করে তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। অতিমারি করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপ জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দ্য ইকোনমিস্ট’, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বসসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। অতি সম্প্রতি কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে বিশ্বের জন্য গভীর অনুপ্রেরণাদায়ী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
লেখক, সহ সম্পাদক ডেইলি রাঙা প্রভাত
প্রধান পৃষ্ঠপোষক, সম্ভাবনার কলসকাঠী